বর্ষা এলেই পড়া বন্ধ হয়ে যায় টুকরা খাসের পড়ুয়াদের

মোস্তাক মোরশেদ হোসেন, বীরপাড়া, ৪ মার্চঃ বন লাগোয়া  মহল্লাটিতে প্রায় শচারেক মানুষের বাস। অথচ, এলাকায় গোটা  তিনেক আইসিডিএস কেন্দ্র থাকলেও কোনো প্রাথমিক  স্কুল এমনকি কোনো শিশুশিক্ষাকেন্দ্র পর্যন্ত নেই। স্কুলে পড়তে নদী পেরিযে ভিন গাঁয়ে যেতে হয় বীরপাড়ার অদূরে অবস্থিত টুকরা খাসবস্তির পড়ুয়াদের।  তবে, নদীতে সেতু না থাকায় বর্ষা এলেই এলাকার পড়ুয়াদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হযে য়ায়। স্বাভাবিকভাবেই, মহল্লায়  প্রবেশের মুখে অবস্থিত সুক্তি নদী অথবা দলমোর ঝোরার ওপর সেতু  তৈরির দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একইসঙ্গে তাঁরা এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতেও সরব হয়েছেন।

মাদারিহাট বীরপাড়া ব্লকের বীরপাড়ার কাছেই অবস্থিত টুকরা খাসবস্তি। এলাকায় প্রবেশের দুটি রাস্তা রয়েছে। প্রথমটি মূলত নদীপথ। বীরপাড়ার লালপুলের কাছে সুক্তি নদীতে নেমে হেঁটে অথবা সাইকেলে চেপে যাতায়াত করেন এলাকাবাসী। প্রসঙ্গত, বর্ষাকাল ছাড়া অন্য কোনো মরশুমে সুক্তি নদীতে জল না থাকায় নদীবক্ষকেই রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করেন তাঁরা। আবার একটু ঘুরপথে দলমোর ঝোরা পেরিযে টুকরা খাসে যাওয়া য়ায়। দলমোর ঝোরার ওপরও সেতু বা কালভার্ট নেই। দলমোর ঝোরা পেরিযে বীরপাড়ার আপার লাইনে অবস্থিত  প্রাথমিক বিদ্যালয়েপড়াশোনা করতে যায় এলাকার পড়ুয়ারা। টুকরা খাসের বাসিন্দা তথা বীরপাড়া নেপালি হাইস্কুল, মহাবীর হিন্দি হাইস্কুলের পড়ুয়ারাও নদী পার হয়ে স্কুলে যায়। কিন্তু, বর্ষা এলেই তাদের স্কুলে য়াওয়া বন্ধ হযে যায় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দা সুশীল তামাং বলেন, শুধু স্কুল পড়ুয়ারাই নয়, বর্ষাকালে দিনের পর দিন এলাকায় বন্দি হয়ে থাকতে হয় গ্রামবাসীকে। সুক্তি নদী অথবা দলমোর ঝোরার যেকোনো একটির ওপর সেতু তৈরি হলেই সমস্যা মিটে যাবে। তবে একইসঙ্গে, এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় তৈরি করা দরকার।

প্রসঙ্গত, টুকরা খাসবস্তির পূর্ব ও উত্তর দিক ঘিরে রয়েছে দলমোর ঝোরা। দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকে ঘিরে রয়েছে সুক্তি নদী। ফলে, এলাকাটির অবস্থান একপ্রকার দ্বীপের মতো। বৃষ্টি হলেই বিচ্ছিন্ন হযে যায় এলাকাটি। ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা বিপুল জলরাশি ওই নদী ও ঝোরাগুলির মাধ্যমে বযে যায়। স্বাভাবিকভাবেই, ওই নদী বা ঝোরা পার হওয়া তখন অসম্ভব হযে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বছর নির্বাচনের আগে এলাকায় সেতু, স্কুল তৈরির প্রতিশ্রুতি পান তাঁরা। অথচ, আজ পর্যন্ত প্রতিশ্রুতি পালনে রাজনৈতিক দলগুলি এবং জনপ্রতিনিধিরা উদ্যোগ নেননি।

এ প্রসঙ্গে মাদারিহাট বীরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রোহিত বিশ্বকর্মা বলেন,  টুকরা খাসে প্রবেশের জন্য সেতু নির্মাণে যে বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করা প্রয়োজন তা মঞ্জুর করা পঞ্চায়েত সমিতির এক্তিয়ারে পড়ে না। তবে, সেতুর বিষয়টি পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে আলিপুরদুয়ার জেলাপরিষদে জানানো হয়েছে। গত সপ্তাহেই জেলাপরিষদের তরফে টুকরা খাসে সেতু তৈরির জন্য প্রযোজনীয় সমীক্ষা করা হয়েছে। প্রাথমিক স্কুলের বিষয়টি নিযে চিন্তাভাবনা চলছে।

 



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2GZs6cx

March 04, 2019 at 12:31PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top