ইসলামপুর, ১ মার্চঃ ইসলামপুর থেকে রায়গঞ্জ যাওয়র জন্য সকালে ট্রেনের দাবি উঠল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রায়গঞ্জ জেলা সদর হওয়ায় নানা প্রযোজনে ইসলামপুরের বাসিন্দাদের সেখানে ছুটতে হয়। ডালখোলায় যানজটের জেরে এমনিতেই যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল পরিস্থিতি। তার মধ্যে ইসলামপুর থেকে সকালবেলা রায়গঞ্জ যাওয়ার কোনো ট্রেন নেই। অগত্যা ডালখোলা ও টুঙ্গিদিঘির জ্যামের কথা মাথায় রেখে বাস কিংবা ছোটো গাড়ির উপর ভরসা করতে হয় ইসলামপুরে বাসিন্দাদের।
স্থানীয় ও রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি থেকে রায়গঞ্জ যাওয়ার জন্য একটি ডিইএমইউ প্যাসেঞ্জার ট্রেন রয়েছে। তাতে চেপেই ইসলামপুরের আলুযাবাড়ি রোড স্টেশন থেকে রায়গঞ্জ যাওযা যায়। কিন্তু ট্রেনটি প্রতিদিন সন্ধ্যা সাতটায় আলুয়াবাড়ি রোড ছেড়ে যায়। দিনে বারসই জংশনে নেমে ট্রেন বদলে যাওযার ব্যবস্থা থাকলেও সারা দিনে মাত্র একটি ট্রেন রয়েছে। সময়মতো পৌঁছাতে না পারলে সেই ট্রেন আদৌ পাবেন কিনা, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে যায় যাত্রীদের মধ্যে। তাই অগত্যা বাস কিংবা ছোটো গাড়ির ভরসা করতে হয়।
ইসলামপুর থেকে রায়গঞ্জের দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। মাঝে ডালখোলার কুখ্যাত যানজট সর্বজনবিদিত। টুঙ্গিদিঘির যানজটও মানুষকে ভাবায়। পাশাপাশি, বিলাসপুরে সোমবার ও বৃহস্পতিবার হাট বসে বলে সেখানেও যানজট হয়। রায়গঞ্জ থেকে ইসলামপুর এমনিতে ঘণ্টাতিনেক সময় লাগে। কিন্তু যানজটে পড়লে কত সময় লাগবে সে বিষয়ে নিশ্চয়তা নেই। ফলে রায়গঞ্জ যেতে হলে রীতিমতো আতঙ্কে থাকেন বাসের ড্রাইভার ও কনডাক্টর থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীরা।
নিত্যযাত্রী অজয় সরকার বলেন, যদি কখনও বাসের কনডাক্টরকে জিজ্ঞাসা করা হয়, রাযগঞ্জ কখন পৌঁছাবে তাঁরা উত্তর দিতে পারেন না। জানিয়ে দেন ডালখোলা, টুঙ্গিদিঘি পার হলেই বলা যাবে। একটি সরকারি বাসের কনডাক্টর জানিয়েছেন, নিত্যদিন যানজটের যা অবস্থা, তাতে কখন বাস রায়গঞ্জে পৌঁছাবে তা বলা মুশকিল।
এদিকে ইসলামপুর মহকুমার চোপড়া ব্লকের দাসপাড়া, লক্ষ্মীপুর, সোনাপুর কিংবা ইসলামপুর ব্লকের আগডিমটিখন্তি, কমলাগাঁ সুজালী গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের কোনো কাজে রাযগঞ্জ যেতে হলে তাঁদের দিনে দিনে কাজ করে ফেরা মুশকিল। আত্মীয় বাড়ি কিংবা হোটেলে থাকা ছাড়া গতি নেই। ইসলামপুরের পাছুরসিয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীর বর বলেন, সকালে রায়গঞ্জ যাওযার ট্রেন না থাকায় ছোটো গাড়ি কিংবা বাসে যেতে হয়। যানজট থাকলেও উপায় নেই। অনেক সময় পৌঁছাতে এতটাই দেরি হয়, সেদিন কোনো কাজই হয় না। সকালে ট্রেন থাকলে সেই সমস্যাটা থাকত না।
এ বিষয়ে ইসলামপুর নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক হিমাংশু সরকার জানিয়েছেন, এই দাবি ইসলামপুরের দীর্ঘদিনের। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা একাধিকবার রেলকে স্মারকলিপি দিয়েছেন, স্থানীয় সাংসদকে জানিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এবার বিষয়টি নিয়ে বড়ো আন্দোলনে নামার হুঁশিযারি দিয়েছেন তিনি। যদিও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ম্যানেজার সি পি গুপ্তাকে এ ব্যাপারে ফোন করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ওই দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই সংক্রান্ত কোনো প্রস্তাব বা পরিকল্পনা আপাতত তাঁদের নেই।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2TguiCv
March 01, 2019 at 03:38PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন