ঢাকা, ২৪ মার্চ- স্ত্রী সাদিয়া আক্তার সুমির দায়ের করা মারধরের মামলায় জেলে রয়েছেন আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। ইতোমধ্যে দুদফা জামিন চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। তাই জেলের ভেতর তার দিন কাটছে বসে, শুয়ে ও ঘুমিয়ে। গত ৭ মার্চ জেলে যাওয়ার পর জনপ্রিয় এ ইউটিউবারকে শুধু একদিন দেখতে গিয়েছিলেন তার বাবার পরিবারের সদস্যরা। স্ত্রী পক্ষের কেউ বা ভক্তরা একদিনও খোঁজও নেয়নি। এরপও তিনি স্বপ্ন দেখছেন, চলচ্চিত্র তৈরি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী এবং মন্ত্রী হওয়ার। বগুড়া কারাগারের জেলার রফিকুল ইসলাম ও ডেপুটি জেলার আবু সাদ্দাদ জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে হিরো আলমকে অধুমপায়ী সেলে রাখা হয়েছে। তার সঙ্গে বিভিন্ন মামলার তিন-চার জন হাজতি রয়েছেন। গত ১৬ দিনের মধ্যে শুধু একদিন তার বাবার পরিবারের সদস্যরা তাকে দেখতে এসেছিলেন। তার স্ত্রী বা কোনো ভক্ত আসেনি। হিরো আলম সেলে চুপচাপ থাকেন। কখনো অন্য হাজতিদের সঙ্গে গল্প করে, বসে, শুয়ে ও ঘুমিয়ে সময় কাটান। তিনি বাইরের বা জেল ক্যান্টিনের না, বরং সরকারের বরাদ্দ জেলের খাবার খান। হিরো আলম জেল কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে করা মামলায় জামিন পাওয়া কোনো বিষয় না। শিগগিরই তিনি জামিনে ছাড়া পাবেন এবং মামলায় নিরাপরাধ প্রমাণিত হবেন। স্ত্রীর সঙ্গে সৃষ্ট ঝামেলা মিমাংসা করে নিবেন। এরপর চলচ্চিত্র নির্মাণে মনোযোগী হবেন। হিরো আলম আরও জানান, গত ৩০ ডিসেম্বর বগুড়া-৪ আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়ে তিনি তার জনপ্রিয়তার প্রমাণ পেয়েছেন। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। তার বিশ্বাস ওই নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হবেন। এ ছাড়া জনপ্রিয়তা ও যোগ্যতার কারণে তাকে মন্ত্রী করা হবে। আর মন্ত্রী হতে পারলেই নিজ এলাকা তথা বগুড়ার উন্নয়নে কাজ করবেন। পুলিশ জানায়, যৌতুক না পেয়ে হিরো আলম গত ৫ মার্চ সন্ধ্যায় তার স্ত্রী সাদিয়া আক্তার সুমিকে মারধর করেন বলে অভিযোগ আছে। পরে শ্বশুর সাইফুল ইসলাম মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরদিন সদর থানায় হিরো আলমের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে পুলিশ তাকে থানায় ডেকে গ্রেপ্তার করে। হিরো আলমকে ৭ মার্চ বগুড়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির কর হয়। তার পক্ষে অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান স্বপন জামিন চাইলে শুনানী শেষে বিচারক আহমেদ শাহরিয়ার তারিক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে গত ১১ মার্চ অ্যাডভোকেট একেএম সাইফুল ইসলাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হিরো আলমের অন্তঃবর্তীকালীন জামিন প্রার্থনা করেছিলেন। বিচারক জেলা ও দায়রা জজ নরেশ চন্দ্র সরকার শুনানী শেষে নামঞ্জুর করেন। হিরোর জামিনের বিষয়ে হাইকোর্টের আবেদন করার কথা ছিল। হিরো আলমের স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, দুই মাস পর গত ৪ মার্চ রাতে হিরো আলম বগুড়া শহরতলির এরুলিয়ায় গ্রামের বাড়িতে যান। রাতে বিছানায় শুয়ে দীর্ঘ সময় ঢাকায় এ নারীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এর প্রতিবাদ করলে হিরো আলম ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর করেন। সুমি আরও অভিযোগ করেন, তিনি শুনেছেন হিরো আলম ঢাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এ কারণে তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তানের খোঁজ রাখেন না এবং সংসারের খরচ দেন না। এ প্রসঙ্গে কথা বললেই তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন হিরো আলম। সে সময় এ প্রসঙ্গে হিরো আলম সাংবাদিকদের জানান, এসব তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার ডিশের ব্যবসা হাতিয়ে নিতে এসব মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। তিনি স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে তাকে নির্যাতনের অভিযোগ করেন। বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের হিরো আলম পেশায় ক্যাবল অপারেটর বা ডিশ ব্যবসায়ী। পরবর্তীতে মিউজিক ভিডিও করে ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন হিরো আলম। পরে কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেন তিনি। তার এ প্রার্থীতা নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়। এন এ / ২৪ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2FvpFMW
March 24, 2019 at 07:51PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন