ঢাকা, ২৪ মে- কোনো প্রকার কর্তন ছাড়াই ছাড়পত্র পেল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক আশরাফ শিশিরের আমরা একটা সিনেমা বানাবো। গত ১৬ মে সেন্সর বোর্ডে প্রদর্শনের পর ১৯ মে চলচ্চিত্রটি সেন্সর সার্টিফিকেট পায়। একই উদ্যোগে একই শিল্পী ও কলাকুশলী নিয়ে নির্মিত ফিকশন বা কাহিনিভিত্তিক চলচ্চিত্র হিসাবে এটিই পৃথিবীর ইতিহাসে দীর্ঘতম চলচ্চিত্র, যার দৈর্ঘ্য ২১ ঘন্টা, পরিচালক যাকে দাবি করছেন মুক্ত দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র হিসেবে। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে ছবিটি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের জন্য পরিচালক একে ৮টি চ্যাপ্টার বা অধ্যায়ে ভাগ করেছেন। প্রথম পর্যায় হিসাবে চলচ্চিত্রটির প্রথম ও দ্বিতীয় অধ্যায় যেগুলোর দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ২ ঘন্টা ৫৪ মিনিট এবং ২ ঘন্টা ৪৫ মিনিট এর সেন্সর করা হয়েছে। ২০০৯ সালের মে মাসে শুরু হয়ে ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত প্রায় ৯ বছর ধরে ঈশ্বরদীর রুপপুর, পাকশী ও পদ্মা নদীর তীরে ৪০০০ কলাকুশলী ও শিল্পীদের নিয়ে এর শুটিং সম্পন্ন করা হয়। চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম। সম্পূর্ণ সাদা-কালোয় নির্মিত চলচ্চিত্রটির কাহিনী গড়ে উঠেছে এমন এক জনপদকে ঘিরে, যেখানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে রাজনৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়ের মধ্যে কয়েকজন নিষ্পাপ মানুষের সিনেমা নিয়ে বিপ্লবী হয়ে ওঠা এবং স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গের গল্প। এ বিষয়ে পরিচালক বলেন, তৃতীয় বিশ্বের ছোট্ট একটি দেশের ছোট্ট একটি শহরে আমাদের যে জীবন, তা ভীষণ সাদাকালো। আমরা যে স্বপ্নটুকু দেখি তা কিছুটা রঙ্গিন। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষ মূলত: নিষ্পাপ, শুধুমাত্র পরিস্থিতি- পারিপার্শ্বিকতার কারণে তারা অনেক অন্যায় করতে বাধ্য হয়। সিনেমা বানানোর বিপ্লবের পাশাপাশি এখানে এমন এক নিষ্পাপ মানুষের গল্প রয়েছে, যে জীবনে একটি পিঁপড়াকেও হত্যা করেনি, অথচ ছবির শেষে সে একজনকে খুন করে ফেলে এমন এক নারীর জন্য যাকে সে কোনদিনও দেখেনি। চলচ্চিত্রের অস্বাভাবিক দৈর্ঘ্যের বিষয়ে আশরাফ শিশির বলেন, শিল্পকে কোন গৎবাঁধা দৈর্ঘ্যে বা পরিমাপে আটকে রাখা যাবে না, এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে সত্যকাহিনী অবলম্বনে আমরা একটা সিনেমা বানাবো নির্মাণ করেছি। এর দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ২১ ঘন্টা, তাই এটিকে মুক্তদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র হিসাবে গণ্য করা হচ্ছে। সব ঠিকঠাক থাকলে আমরা একটা সিনেমা বানাবো হবে বিশ্ব-চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এ যাবতকালে নির্মিত সর্বাধিক দৈর্ঘ্যের কাহিনীচিত্র। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, সুমনা সোমা, স্বাধীন খসরু, মাসুম আজিজ, প্রাণ রায়,আয়শা মুক্তি, তেরেসা চৈতি, , এলিনা শাম্মী, অরণ্য রানা, দুখু সুমন, জান্নাত সোমা, ইমরান, স্মরণ , সৈকত, ইয়াসিন, টিটো, সানসি, অর্নব, লিজা, মানিক, সজীব, নুপুর, সুজয়, রাব্বী, উজ্জ্বল,দীপ, সাদ্দাম,তুয়া, তুর্য, মাঈশা, মিমো, সুপ্ত, বিশাল, মিন্টু, মানিক, লিটন, শুভ, অলক, ভাস্কর, সম্রাট, আজাদ সহ চার হাজার শিল্পী। এতে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন রাফায়েত নেওয়াজ ও সম্পাদনা করেছেন সাব্বীর মাহমুদ। চিত্রগ্রহণ করেছেন মোহম্মদ আশরাফুল, সমর ঢালী ও সাব্বির। প্রধান শিল্প নির্দেশক সলিল মজুমদার। উল্লেখ্য, আশরাফ শিশিরের প্রথম চলচ্চিত্র গাড়িওয়ালা ৩২টি দেশের শতাধিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেয় এবং জাতীয় পুরস্কারসহ ২৭টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে। তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র গোপন ১৫টি দেশের ২৪টির আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেয় এবং দিল্লী আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার অর্জন করে। এই পরিচালকের মধ্যদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র যুদ্ধটা ছিল স্বাধীনতার এবারের ৭২তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে শর্ট ফিল্ম কর্ণার সেকশনে অন্তর্ভূক্ত হয় এবং এখন পর্যন্ত ৯টি দেশের ১৪টির বেশী আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেওয়ার যোগত্যা অর্জন করেছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আর এস/ ২৪ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2W2V9UA
May 24, 2019 at 12:33PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top