ঢাকা, ০২ মে- কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই, মান্না দেও আর নেই। শুধু আছে তার অজস্র গানের স্মৃতি। ১৯১৯ সালের ১লা মে জন্ম নেয়া এই কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পীর শততম জন্মদিন। শুভদিনে অবিরাম শ্রদ্ধা সবর্কালের সেরা এই গায়কের প্রতি। মান্না দে উপমহাদেশের অন্যতম সেরা সঙ্গীত শিল্পীদের একজন। তার প্রকৃত নাম প্রবোধ চন্দ্র দে। হিন্দি, বাংলা, মারাঠি, গুজরাটিসহ অনেক ভাষায় তিনি ষাট বছরেরও অধিক সময় সঙ্গীত চর্চা করেছিলেন। অনেক বিশেষজ্ঞ সঙ্গীতবোদ্ধারা হিন্দি গানের ভুবনে সবর্কালের সেরা গায়ক হিসেবে স্বীকার করে থাকেন। মান্না দে গায়ক হিসেবে আধুনিক বাংলা গানের জগতে সর্বস্তরের শ্রোতাদের কাছে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় ও সফল সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব। হিন্দি ও বাংলা সিনেমায় গায়ক হিসেবে অশেষ সুনাম অর্জন করেছেন। ধ্রুপদী সঙ্গীত থেকে বাংলা আধুনিক গান, ভক্তিগীতি, কীর্তন কিংবা কবিগান বাংলা গানের জগতের সব আঙ্গিকেই রয়েছে তার স্পর্শ। সারা জীবনে ৫ হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন মান্না দে। ২০১২ সালে শেষবার এই কিংবদন্তী লাইভ পারফরম্যান্স করতে দেখেছেন সঙ্গীতপ্রেমীরা। ২৪ অক্টোবর, ২০১৩ সালে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনি। মান্না দে তার শৈশব পাঠ গ্রহণ করেছেন ইন্দু বাবুর পাঠশালা নামে একটি ছোট প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তারপর স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল ও স্কটিশ চার্চ কলেজে স্নাতক শেষ করেন। স্কটিশ চার্চ কলেজে অধ্যয়নকালীন তিনি তার সহপাঠীদেরকে গান শুনিয়ে আসর মাতাতেন। ঐ সময়ে আন্তঃকলেজ গানের প্রতিযোগিতায় ধারাবাহিকভাবে তিন বছর তিনটি আলাদা শ্রেণীবিভাগে প্রথম হয়েছিলেন মান্না দে। তিনি তার কাকা কৃষ্ণ চন্দ্র দে ও উস্তাদ দাবির খানের কাছ থেকে গানের শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৪২ সালের দিকে কৃষ্ণ চন্দ্র দের সাথে সহকারী সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তারপর শচীন দেব বর্মণর অধীনে কাজ করেন। পরবর্তীতে বেশ কিছু স্বনামধন্য গীতিকারের সান্নিধ্যে গিয়ে তিনি স্বাধীনভাবে কাজ শুরু করেন। এছাড়া উস্তাদ আমান আলী খান ও উস্তাদ আব্দুল রহমান খানের কাছ থেকে হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নেন। পেশাগত জীবনে তামান্না চলচ্চিত্রে গায়ক হিসেবে মান্না দের অভিষেক হয়। তার বিখ্যাত কিছু বাংলা গানের মধ্যে আছে- কফি হাউজের সেই আড্ডাটা, আবার হবে তো দেখা, এই কূলে আমি, আর ওই কূলে তুমি, তীর ভাঙা ঢেউ আর নীড় ভাঙা ঝড়, যদি কাগজে লেখো নাম, সে আমার ছোট বোন। তার উল্লেখযোগ্য হিন্দি গানের মধ্যে আছে- পেয়ার হুয়া ইকরার হুয়া, কেতকী গুলাব জুহি, লাগা চুনরি মে দাগ, জিন্দেগী ক্যায়সি হে পেহেলি, ইয়ে রাত ভিগি, ভিগি, তু প্যায়ার কা সাগর হে। সঙ্গীত জগতে অসামান্য অবদানের জন্য মান্না দে ভারত সরকার কর্তৃক ১৯৭১ সালে পদ্মশ্রী, ২০০৫ সালে পদ্মবিভূষণ ও ২০০৭ সালে দাদাসাহেব ফালকে সম্মাননা পেয়েছেন। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে রাজ্যের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান বঙ্গবিভূষণ প্রদান করে। আর/০৮:১৪/০২ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2GV3a4F
May 02, 2019 at 03:05PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন