ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর- অংকের হিসেবে ব্যবধান ২৫ রানের; কিন্তু আসলে কি তাই? মাঠে বাংলাদেশ আর আফগানিস্তান- দুদলের শরীরি ভাষা, লক্ষ্য, পরিকল্পনা, ব্যাটিং-বোলিং আর ফিল্ডিং অ্যাপ্রোচ-অ্যাপ্লিকেশন এবং পারফরমেন্সের চুলচেরা বিশ্লেষণে অতিবড় বাংলাদেশ ভক্তও মানছেন আসলে দুদলের ব্যবধান বিস্তর। এই ব্যবধান বুঝতে , জানতে বোদ্ধা , বিশেষজ্ঞ আর ক্রিকেট পন্ডিত হবার দরকার নেই। খালি চোখেই ধরা পড়েছে আফগানিস্তান টি টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনেক সাজানো গোছানো দল। তারা খুব ভাল জানে কখন কি করতে হবে? মাত্র ১২০ বলের খেলা, তাতে কি! আফগানরা দেখিয়ে দিল বিপদে, সংকটে আর চাপে পড়েও একটু রয়ে-সয়ে উইকেট বাঁচিয়ে খেলে আবার রানের চাকা সচল এবং এক সময় গিয়ে হাত খুলে স্কোরলাইন মোটা তাজা করতে হয়। সেখানেই বাংলাদেশ অনেক পিছনে। না হয়, শুরুর ১০ ওভার দুই দলই ৪ উইকেট খুইয়েছিল; কিন্তু ২০ ওভার শেষে দুপক্ষের স্কোর লাইন ভিন্ন। অ্যাপ্রোচ-অ্যাপ্লিকেশনটাও দুধরনের। আফগানরা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, শুরুর বিপর্যয় ঠেকাতে প্রথমে গাণিতিক এবং ক্রিকেটের বেসিক মেনে খেলতে হয়। তারপরও এক সময় গিয়ে পাওয়ার হিটিংয়ে রানের গতি বাড়াতে হয়। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা তা পারেননি। তারা বিপদে ঠান্ডা মাথায় বেসিক ঠিক রেখে উইকেট আগলে রাখার পাশাপাশি সিঙ্গেলস-ডাবলসে রানের চাকা সচল রাখতে পারেননি। পারার চেষ্টাও ছিল না। তার বদলে অযথা ছটফট করে তেড়েফুঁড়ে ক্রস ব্যাটে রিভার্স সুইপের মত অপ্রেয়োজনীয় শটস খেলে উল্টো বিপদ আরও ঘণিভূত করে ফেলেছেন। খেলা শেষে প্রশ্ন উঠলো রান তাড়া করতে গিয়ে এই যে শুরু থেকে বালির বাঁধের মত ভেঙ্গে পড়া, সেটা কেন? এর কারণ কি? ম্যাচ শেষে প্রেস কনফারেন্সে এ প্রশ্নের জবাবে টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান অল্প কথায় বুঝিয়ে দিলেন, আসলে পার্থক্য আছে। সেটা শুধুই স্কিলে নয়। মানসিকতায়ও। তাইতো মুখে এমন কথা, স্কিলে সমস্যা আছে। সে সাথে মাইন্ডসেটটাও ঠিক ছিল না। আফগানরা সংকট ও বিপদ কাটিয়ে পাওয়ার হিটিংয়ে চার ছক্কায় স্কোর লাইন বড় করে ফেলতে পারে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের পাওয়ার হিটিংয়ে ঘাটতি আছে। তা মেনেও সাকিব মনে করেন, তাইজুলের নো বলটা (যাতে আউট হয়েছিলেন আসগর আফগান ৩৬ রানে, কিন্তু নো বলের কারণে আউট বাতিল) ভাইটাল। এছাড়া অতিরিক্ত থেকে ১৮ রান দেয়াকেও পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন সাকিব। তিনি বলেন, পাওয়ারে তো আমরা সব সময় স্ট্রাগল করবো জানি। লাস্ট ১০ ওভারে আফগানরা করেছে ১০৬ রান। ওভার পিছু ১০ রানের ওপরে। ওরা যেভাবে প্রেসার হ্যান্ডেল করে তারপর রানের চাকা সচল করেছে, সে জন্য তাদের কৃতিত্ব দিতেই হবে। সাথে নো বলটাও ভুগিয়েছে। এক্সট্রা আমরা ১৫/১৬ রান (আসলে ১৮) দিয়েছি। অতিরিক্ত থেকে রান দিয়েছি বেশি। এই সবই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেয়। টি-টোয়েন্টিতে ২৫ অনেক, এ কথা স্বীকার করেও সাকিব বলেন, আমরা এত ভুলের পরও ব্যবধান এই। কাজেই বলা যায় না যে দুদলের পার্থক্য খুব বেশি। টাইগার অধিনায়কের অনুভব-উপলব্ধি, আফগানদের ১৩৫ রানে বেঁধে ফেলা উচিৎ ছিল। তিনি বলেন, হতাশ এই জন্য লাগে যে, ওদের ১৩৫ রানের মধ্যে বেধে রাখা উচিৎ ছিল। আসলে আমরা ওদের ম্যাচ দিয়ে এসেছ বলে আমি মনে করি। দুই হাতে লুফে নেয়ার সুযোগ ছিল আমাদের। আফগানদের সাথে মূল পার্থক্য কোথায়? এ প্রশ্নে সাকিবের অভিনব জবাব, পার্থক্যতো আছেই। ওরা (আফগানরা) র্যাংকিংয়ে ৭ নম্বরে। আমরা ১০। এছাড়া আর পার্থক্য ঠিক কোথায়? তার জবাবে সাকিব বলে উঠলেন, জানি না। মুশফিকুর রহিমকে দিয়ে ওপেন করানো হলো কেন? সাকিবের ব্যাখ্যা, শুরুটা ভাল হচ্ছে না। মুশফিকের অভিজ্ঞতা ও সামর্থ্য দিয়ে সে ঘাটতি পূরনের কথা ভাবা হয়েছিল। তাই সবাই মিলেই মুশফিককে ওপেন করানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ আসরে বাংলাদেশের সম্ভাবনা কতটা, ফাইনাল খেলা কি সম্ভব? এমন প্রশ্নর জবাবে সাকিবের আশাবাদী উচ্চারণ, এখনো দুটি ম্যাচ আছে। জিম্বাবুয়ে দুটিতেই হেরেছে। আমাদের ফাইনালে যাওয়া উচিৎ। সূত্র: জাগোনিউজ আর/০৮:১৪/১৬ সেপ্টেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2Q8bSmS
September 16, 2019 at 05:12AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top