কলকাতা, ০২ সেপ্টেম্বর - আমি তো একজন উচ্চমানের অভিনেতা নই। আমাকে দয়া করে লোকে কাজ দেয়। কিছু জায়গায় আবার ভালোবেসেও দেয়। সে জন্য আমার সঙ্গে লোকে ছবি তোলে, অটোগ্রাফ নেয়। কথাগুলো বলছিলেন কলকাতার ফেলুদাখ্যাত জনপ্রিয় অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী। ভুবন মাঝি খ্যাত নির্মাতা ফাখরুল আরেফিন খান নির্মাণ করছেন নতুন সিনেমা গণ্ডি। ছবিটির শেষ অংশের শুটিং শুরুর আগে রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে একটি রেস্টুরেন্টে হাজির হয়েছিলেন এই সিনেমার টিম। শুটিংয়ে অংশ নিতে উড়ে আসেন সব্যসাচী। অনুষ্ঠানে হাজির হন তিনিও। সেখানেই ফেলুদাখ্যাত অভিনেতা নিজের সম্পর্কে বলেন কথাগুলো। শুভজিৎ রায়ের পথের সাথী গল্প অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে গণ্ডি সিনেমাটি। রোমান্টিক-কমেডি ঘরানার এই কাহিনী এগিয়ে যাচ্ছে মূলত ৫৫ ও ৬৫ বছর বয়সী দুজন নারী-পুরুষের গল্প নিয়ে। এই দুটি চরিত্রেই অভিনয় করেছেন সব্যসাচী ও সুবর্ণা। এতে নিজের চরিত্র নিয়ে সব্যসাচী বলেন, বয়স ছাড়া এই চরিত্রের সঙ্গে বোধ হয় আমার আর কোনো মিল নেই। কারণ আমি হয় গুণ্ডা না হয় পুলিশ, নয় গোয়েন্দা এমন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে আসছি এত দিন। যা নাম হয়েছে ওই সব চরিত্রের জন্যই। তবে প্রথম জীবনে হয়তো দু-একটি এমন চরিত্রে অভিনয় করেছি। তার পর থেকে এমন চরিত্রে আর ডাকা হয়নি। আমার এমন চেহারার জন্য হয়তো কেউ আর ওই ধরনের চরিত্রে আমাকে ডাক দেয়নি। গণ্ডির পরিচালক কেন আমাকে এই চরিত্র দিয়েছেন সেটা আমিও বোঝতে পারছি না। টলিউড, বলিউড, তামিল এবং ঢালিউড সব জায়গাতেই জনপ্রিয় অভিনেতা সব্যসাচী। অভিনয় করেছেন এই চার ইন্ডাস্ট্রির ছবিতে। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা এ অভিনেতা আজকের এ অবস্থানের পেছনে আসতে কম চড়াই উতরাই পেরোতে হয়নি। তার উঠে আসার পেছনে রযেছে আবার অনেকের অবদানও। নিজ বক্তব্যে স্মরণ করলেন সে সব মানুষকে। তিনি বলেন, অনেকে আমাকে বলে আমার গলা বেশ ভারি। আমার নাকি আবৃত্তির গলা। ভারি গলা হলেই যে আমি ভালো আবৃত্তি করতে পারব তার কোনো গ্যারান্টি নেই। আর আমার যে চেহারা তাতে অভিনেতা হওয়ার কোনো সুযোগই ছিল না। শুটিংয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট যিনি চা দেয়, আমার তার চেয়েও কম গুণ। জানিনা কীভাবে যেন অভিনেতা হয়ে গেলাম। হয়তো শুরুতে অনেক মার খেয়েছি, অনেক বকা খেয়েছি, অনেক ঘাম ঝরিয়েছি, অনেক পরিশ্রম করেছি এই জন্য। এর পেছনে অনেকের অবদানও রয়েছে। তাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। গণ্ডিতে সব্যসাচীর বিপরীতে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা সুবর্ণা মোস্তাফা। আরও আছেন অপর্ণা ঘোষ ও মাজনুন মিজান। নিজের বিপরীতে সুবর্ণা মোস্তাফাকে পেয়ে নিজেকে সৌভাগ্যবান ভাবছেন বলেই জানালেন এ অভিনেতা। বললেন, আমার সৌভাগ্য যে আমি এমন একজন অভিনেত্রীর সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছি। যিনি অনেক জনপ্রিয় এবং অত্যন্ত গুণী। ফলে এই ছবিতে কাজ করতে এসে একটা বিষয় বোঝেছি এই ছবিতে আমি হ্যাঁ বলে ভুল করিনি। অনেক বড় অভিনেতা নন সব্যসাচী। বার বার নিজের বক্তব্যে এমন কথাই উচ্চারিত হলো তার। পরিচালক যদি তাকে বড় ভাবেন তাহলে ভুল। তার ওপর ভর করে সিনেমাও চলবে না। ছবি বলবে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর। মন্তব্য করেন বলিউডের দিল সে, খাকি, ও পরিণীতা ছবির এ অভিনেতা। যিনি অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরুপ কলকাতার কলাকার পুরস্কার, আনন্দলোক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এই সময়ে ছবি দেখার প্ল্যাটফর্মের পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু হলে বসে বিশাল পর্দায় ছবি দেখার আনন্দ অন্য রকম। তাই হলে গিয়ে ছবি দেখার সময় বের করার আহ্বান জানিয়ে সব্যসাচী বলেন, অনেক কিছুর জন্যই তো আমরা সময় বের করি। অনেক বাজে কাজের জন্যও সময় বরাদ্দ থাকে আমাদের। তাহলে সিনেমা হলে গিয়ে দেখার জন্যও কিছুটা সময় বের করুন। কারণ আমরা অনেক কষ্ট করে শুটিং করি। দুই ঘণ্টার একটা ছবি বানাতে প্রায় ছমাস লেগে যায়। ছবির মূল শক্তি হচ্ছে লল্গিকারীরা সিনেমাকে ভালোবাসা ছাড়াও বাণিজ্যিক লাভের জন্য সিনেমা তৈরি করেন তারা। অথচ ছবিতে যদি বাণিজ্যিক লাভ না আসে তাহলে তারা আর লগ্নি করবেন না। সিনেমাও আর হবে না। তাই ইউটিউব, অ্যাপস ও ইন্টারনেটভিত্তিক অন্যান্য প্লাটফর্মে না দেখে হলে ছবি দেখার আহ্বান জানান দুই বাংলার দর্শকদের প্রিয় জাঁদরেল এ অভিনেতা। এছাড়াও নিজের বক্তব্যে ভারত ও বাংলাদেশে ছবি আদান-প্রদান ও নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো সীমারেখা থাকার পক্ষে নন তিনি। এই সীমারেখা যখন উঠে যাবে তখন হয়তো আরও ভালো ছবি নির্মাণ হবে বলে নিজের বিশ্বাসের কথা জানান সব্যসাচী। এমনটি হলে আজ না হোক কাল, কাল না হোক পরশু চলচ্চিত্রের সুদিন আসবেই- মন্তব্য করেন গণ্ডির এ অভিনেতা। এন এইচ, ০২ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2lUh13v
September 02, 2019 at 11:36AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন