কলকাতা, ০১ নভেম্বর- পশ্চিমবঙ্গে গুটখা, খৈনি ইত্যাদি তামাকজাত নেশাদ্রব্য এবং সব ধরনের পানমশলা নিষিদ্ধ হচ্ছে। ৭ নভেম্বর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে পরবর্তী এক বছরের জন্য। এই এক বছরে এসব জিনিস তৈরি, মজুত, জোগান এবং বিক্রি আইনত অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ এক বছর হলেও বাৎসরিক নবায়ণের মাধ্যমে তা চিরস্থায়ী হতে পারে। চলতি বছরেই পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকার ১২ ধরনের পানমশলা নিষিদ্ধ করেছে। ওই পানমশলাগুলোতে ক্ষতিকর ম্যাগনেশিয়াম কার্বনেট আছে; যা ক্যান্সারের কারণ বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। আর তারও আগে বিহারে নিষিদ্ধ হয়েছে গুটখা। এ বছর একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা রাজস্থানেও জারি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও এই প্রথম নয়, এর আগে ২০১৩ সালে একবার এক বছরের জন্য পশ্চিমবঙ্গে খৈনি, গুটকা, পানমশলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সরকার। কিন্তু পরের বছর সেই নিষেধাজ্ঞার নবীকরণ হয়নি। পুরো ভারতের ক্ষেত্রে তামাকজাত পণ্য নিষিদ্ধ করার ব্যর্থতা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হতোদ্যম হয়ে পড়ার একটা কারণ হতে পারে। ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্টের এক নির্দেশ মোতাবেক ভারতের খাদ্যগুণ ও সুরক্ষা নিয়ামক কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে সারা দেশে গুটখা নিষিদ্ধ করেছিল। মধ্যপ্রদেশ প্রথম সেই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে। তার পরই মহারাষ্ট্র। পানমশলার ক্ষেত্রে তামাক না থাকলেও ক্ষতিকর ম্যাগনেশিয়াম কার্বনেটের উপস্থিতি ওই জাতীয় সব মশলাকে নিষিদ্ধ তালিকায় এনেছিল। এরপর একে একে রাজধানী দিল্লি, কেরালা, উত্তরপ্রদেশ এই নিষেধাজ্ঞা চালু করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত গুটকা, খৈনি, পানমশলার বহুল ব্যবহারে রাশ টানা যায়নি। বন্ধ করা যায়নি বিক্রি। সেই প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গে জারি হতে যাওয়া নিষেধাজ্ঞা কতটা সুফল দেবে? ভারতীয় ক্যান্সার গবেষণা সংস্থার তথ্য-পরিসংখ্যান বলছে, মুখের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশই হয় এই ধরনের খৈনি, গুটখা ইত্যাদি থেকে। যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধরা পরে দেরিতে, কারণ সাধারণ মানুষ সচেতন নন। প্রায় প্রতিদিনই এরকম ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর মুখ, গলা, ঘাড়ে অস্ত্রোপচার করতে হয় শল্য চিকিৎসক উদয় মুখার্জিকে। তিনি বলছেন, মুখের স্বাস্থ্য রক্ষার ব্যাপারে গড়পড়তা ভারতীয়র সচেতনতা এমনিতেই খুব কম। মুখে ঘা হলে, যতক্ষণ না সেটা ছড়িয়ে পড়ছে, যন্ত্রণা দিচ্ছে, ডাক্তারের কাছে যায় না। তিনি বলেন, নিয়মিত মদ্যপান বা খৈনি, গুটখা, পানমশলা খেলে ওই সাধারণ ঘা থেকে ক্যান্সার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ১৫ গুণ বেড়ে যায়। কাজেই যদি পশ্চিমবঙ্গে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায়, লোকে এসব ক্ষতিকর জিনিস দোকানে দোকানে কিনতে না পারে, তা হলে নিশ্চয়ই লাভ হবে। তবে তার জন্য চাই সচেতনতা, যার দারুণ অভাব সারা দেশেই। ডিডব্লিউ। আর/০৮:১৪/০১ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2PzJzMl
November 01, 2019 at 04:32PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন