ঢাকা, ১২ জানুয়ারি - সফর হবে কি হবে না? জাতীয় দল পাকিস্তানে খেলতে যাবে কি যাবে না? সেটাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন। সব কিছু ঠিক থাকলে হয়তো আগামীকাল ১২ জানুয়ারি রোববার বিকাল বা সন্ধ্যা নাগাদ মিলবে সে প্রশ্নের জবাব। রোববার বিকেল তিনটায় বিসিবি পরিচালক পর্ষদের সভায়ই হয়ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। তবে ধরে নেয়া যায়, বিসিবি যে শেষ প্রস্তাব দিয়েছে, পিসিবি তা মেনে নিলে হয়ত এক টেস্ট আর এক টি-টোয়েন্টি খেলতে আগামী সপ্তাহেই পাকিস্তান যাবে বাংলাদেশ। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) গোঁ ধরে বসে থাকলে আর টাইগারদের পাকিস্তান যাওয়া হবে না। অর্থাৎ পাকিস্তানিদের মোকাবিলার সম্ভাবনা নিঃশ্বেস হয়ে যায়নি, এখনো আছে। সেটা হলে কিন্তু আর প্রস্তুতিরও তেমন ফুরসত মিলবে না। ১৭ জানুয়ারি বিপিএল ফাইনালের ২৪ কিংবা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই উড়ে যেতে হবে পাকিস্তান। সেখানে গিয়ে সবচেয়ে বড় কাজ ও চ্যালেঞ্জটাই হবে পাকিস্তানি ফাস্টবোলারদের বোলিং তোপ সামলানো। পাকিস্তান সর্বশেষ শ্রীলঙ্কার সাথে যে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি আর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলেছে, তাতেই পরিষ্কার হয়েছে পাকিস্তানের মূল চালিকাশক্তিই হলো ফাস্ট বোলিং। এরকম এক অবস্থায় আজ শেরে বাংলায় দুই সাহসি যুবা মুমিনুল হক আর মেহেদী হাসান দেখিয়ে দিলেন পাকিস্তানি ফাস্ট বোলারদের নিয়ে কোন চিন্তার কিছু নেই। সাহস নিয়ে মোকাবিলা করতে চাইলেই তাদের স্বচ্ছন্দে খেলা যায়। তাদের বলে বিগ হিট নেয়া যায়। চার-ছক্কাও হাঁকানো যায় অবলীলায়। বলার অপেক্ষা রাখে না শনিবার সন্ধ্যায় শেরে বাংলায় খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে ১৫৩ রানের বিরাট জুটি গড়ে মাঠ মাতিয়েছেন ঢাকা প্লাটুনের দুই তরুণ মুমিনুল হক আর মেহেদী হাসান। প্রায় ২০০.০০ স্ট্রাইকরেটে ৮৩ বলে করা এ জুটি বিপিএলের এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় পার্টনারশিপ নয়। তবে চতুর্থ উইকেটে সবচেয়ে লম্বা পার্টনারশিপ। এর আগের রেকর্ড পার্টনারশিপটি ছিল দুই ভিনদেশি লরি ইভান্স আর রায়ান টেন ডেসকাটের। এটা গত বিপিএলে। তারা চতুর্থ উইকেটে তুলেছিলেন ১৪৮ রান। আজ সেই রেকর্ড ভাঙ্গলেন দুই স্থানীয় তরুণ। যে পার্টনারশিপে মুমিনুল হকের অবদান ৯১। আর আর মুমিনুল যখন আউট হন তখন মেহেদি হাসান নট আউট ছিলেন ৫৭ রানে। মুমিনুল শেষ পর্যন্ত ১৫৪.২৩ স্ট্রাইকরেটে ৫৯ বলে ৯১ রানে মোহাম্মদ আমিরের বলে শর্ট থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেও তার জুনিয়র পার্টনার মেহেদি হাসান নট আউট ছিলেন ৩৬ বলে ৬৮ রানে (১৮৮.৮৮ স্ট্রাইকরেটে)। এরমধ্যে মেহেদি হাসানের ইনিংসটি অবশ্য নিশ্চিদ্র ছিল না। অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ১২ রানেই আউট হতে পারতেন; কিন্তু শর্ট থার্ডম্যানে ফ্রাইলিংক সে ক্যাচ ফেলে দিলেন নতুন জীবন পান মেহেদি। তারপর আর হার মানেননি। এদিকে মুমিনুল আর মেহেদি দেড়শো রানের বেশি পার্টনারশিপ সাজাতে খেলেছেন প্রায় একই ছন্দ ও লয়ে। তাদের জুটিতে প্রথম ৫০ আসে ৩৪ বলে। ১০০ রান করতে এই জুটি খেলেন ৫৭ বল। আর শেষ পর্যন্ত ১৫০ রান পূর্ণ হয় ৭৭ বলে। এই হাত খুলে খেলার মিশনে খুলনার প্রায় সব বোলারকে তুলোধুনো করেছেন মুমিনুল ও মেহেদি। সবচেয়ে বেশি মার খেয়েছেন পেসার শফিউল। তার ৪ ওভারে ওঠে ৫০ রান। এমনকি প্রথম স্পেলে যার বলে প্রায় ম্যাচেই প্রতিপক্ষ ফ্রন্টলাইনে ফাটল ধরছে সেই পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ আমিরকেও বেধড়ক পিটিয়েছেন মুমিনুল আর মেহেদি। প্রথম দুই ওভারে ৬ রান দেয়া আমিরের শেষ দুই ওভারে ওঠে (১৫+১৪) = ২৯ রান। এর মধ্যে দুদুটি ছক্কাও হজম করেন তিনি। যার একটি করে হাঁকান মুমিনুল ও মেহেদি। শেষ দুই ওভারে আমির একজোড়া ছক্কা ও বাউন্ডারি হজম করেন। তাকে বেশ স্বচ্ছন্দে খেলে লং অনের ওপর দিয়ে পায়ের পাতায় ভর করে বিশাল ছক্কা হাঁকান মুমিনুল। আমিরের শেষ দুই ওভার ছিল এমন (৬+১+০+ওয়াইড, ১+১+৪+২, এবং ১+৪+৬+১+২+উইকেট)। এ দুজনের কেউ বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে নেই। পাকিস্তান সফরে যদি জাতীয় দল যায় এবং টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হলে সেই দলে জায়গা পাবেন- এমন সম্ভাবনাও খুব কম। তারপরও আজ মুমিনুল আর মেহেদী হাসান যে বুক ভরা সাহস, অবিচল আস্থা আর অসামান্য দক্ষতায় মোহাম্মদ আমিরের মত ফাস্ট বোলারকে ইচ্ছেমত পিটিয়েছেন, তা অবশ্যই মূল দলের ফ্রন্টলাইন তথা ব্যাটসম্যানদের জন্য বড় অনুপ্রেরণা। মুমিনুল আর মেহেদি হাসান চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন, সাহস, সামর্থ্যের প্রতি আস্থা আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেললে মোহাম্মদ আমির কেন, পাকিস্তানের যে কোন ফাস্ট বোলারকে তুলোধুনো করা সম্ভব। এখন তামিম, লিটন, সৌম্য (যদি দলে জায়গা পান), আাফিফ, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহরা কি তা দেখে অনুপ্রাণিত হবেন? সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১২ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2FDp0IN
January 12, 2020 at 02:48AM
12 Jan 2020

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top