ঢাকা, ১২ জানুয়ারি - চলতি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শুরু থেকেই দেখা যাচ্ছে, বিদেশি খেলোয়াড়দের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে, কখনও কখনও বিদেশিদের চেয়ে বেশি ভালো খেলছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ব্যাটিং-বোলিং উভয় দিকেই আধিপত্য বিস্তার করছেন স্থানীয় খেলোয়াড়রা। রাউন্ড রবিন লিগের শেষ পর্যায়ে এসে যেন এটি আরও বেড়ে গেলো। শুক্রবার মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুশফিকুর রহীম মিলে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের বোলারদের। দুজনের জুটিতে হয়েছে বিপিএল ইতিহাসের পঞ্চম সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। যা কি না চলতি আসরের সর্বোচ্চ। পরে আজ (শনিবার) দিনের প্রথম ম্যাচে লিটন দাসের নান্দনিক ব্যাটিংয়ে হার মেনেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। দেশিদের ভালো করার ধারাবাহিকতা বজায় রইলো প্রথম রাউন্ডের একদম শেষ ম্যাচেও। এবার মুশফিক-মিরাজদের খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষেই ব্যাটিং তাণ্ডব দেখিয়েছেন ঢাকা প্লাটুনের দুই ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান ও মুমিনুল হক। অল্পের জন্য ভাঙতে পারেননি মুশফিক-মিরাজদের রেকর্ড। তবে গড়েছেন বিপিএল ইতিহাসে চতুর্থ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড। টস হেরে ব্যাট করতে নামা ঢাকা প্রথম পাওয়ার প্লের মধ্যেই মাত্র ৩৫ রানে হারিয়ে ফেলেছিল ৩ উইকেট। চতুর্থ উইকেটে তখন জুটি বাঁধেন মেহেদী ও মুমিনুল। দেখেশুনে খেলেন প্রথম ১০ ওভার। দলের সংগ্রহ তখন ৩ উইকেটে ৭৩ রান। পরের তিন ওভারে আরও ২৬ রান নিয়ে দলীয় সংগ্রহটা ৯৯ রানে নিয়ে ঠেকান দুজনে। ইনিংসের ১৪তম ওভারে রবি ফ্রাইলিংক খরচ করে যান ৯ রান। এর পরের ওভার থেকেই শুরু হয় মূল তান্ডব। যার সুবাদে শেষ ৬ ওভারে ৯৭ রান যোগ করে ঢাকা। সবচেয়ে বেশি ঝড় বয়ে গেছে শফিউল ইসলামের ওপর। তার শেষ দুই ওভারে যথাক্রমে ২১ ও ১৯ রান পায় ঢাকা। শহীদুল ইসলামের করা ১৭তম ওভারে আসে ১১ রান। মেহেদী ও মুমিনুল তাণ্ডবের হাত থেকে রেহাই পাননি মোহাম্মদ আমির কিংবা ফ্রাইলিংকও। নিজের শেষ দুই ওভারে ২৯ রান (১৫ ও ১৪) বিলিয়ে যান আমির। তবে ১৯তম ওভারের শেষ বলে তিনিই আউট করেন মুমিনুলকে, ভেঙে দেন ১৫৩ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। বিপিএল ইতিহাসে চতুর্থ উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড। চতুর্থ উইকেটে আগের সর্বোচ্চ ছিল গত আসরে লরি ইভানস ও রায়ান টেন ডোশেটের করা ১৪৮ রানের জুটিটি। এছাড়া চলতি বিপিএলে এটিই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। অল্পের জন্য মেহেদী ও মুমিনুল ভাঙতে পারেননি মুশফিক-মিরাজের ১৬৮ রানের জুটির রেকর্ড। আমিরের বলে ফ্রাইলিংকের হাতে আউট হওয়ার আগে ৫৯ বলে ৯১ রান করেন মুমিনুল। যা কি না তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ। অথচ নিজের ইনিংসের এক পর্যায়ে ৩৮ বলে ৩৭ রান নিয়ে ধুঁকছিলেন মুমিনুল। এরপর খেলা ২১ বলে ৪টি করে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে আরও ৫৪ রান যোগ করেন তিনি। সবমিলিয়ে নিজের ৫৯ বলের ইনিংসে ৭টি চার ও ৪টি ছক্কা হাঁকান এ বাঁহাতি ওপেনার। অপরপ্রান্তে কম যাননি মেহেদীও। মুমিনুল যখন হাত খুলে খেলতে শুরু করেন তখন তিনি ছিলেন খানিক আড়ালেই। তবে শেষ দুই ওভারে মাত্র ৬ বল মোকাবেলা করে ২২ রান করেন মেহেদি। আমিরকে লংঅফ ও ফ্রাইলিংকে এক্সট্রা কভার দিয়ে ছক্কা মেরে পেসের বিপক্ষে নিজের সামর্থ্যের ব্যাপারেও জানান দেন তিনি। শেষপর্যন্ত অপরাজিতই ছিলেন মেহেদী। সবমিলিয়ে ৩৬ বলে ৩ চার ও ৫ ছক্কার মারে ৬৮ রান করেন তিনি। বিপিএল ইতিহাসে উইকেটপ্রতি সর্বোচ্চ রানের জুটিগুলো ১ম উইকেট - ১৯৭* ল্যু ভিনসেন্ট ও শাহরিয়ার নাফিস (দ্বিতীয় আসর) ২য় উইকেট - ২০১* ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও ক্রিস গেইল (পঞ্চম আসর) ৩য় উইকেট - ১৮৪* অ্যালেক্স হেলস ও এবি ডি ভিলিয়ার্স (ষষ্ঠ আসর) ৪র্থ উইকেট - ১৫৩ মেহেদী হাসান ও মুমিনুল হক (সপ্তম আসর) ৫ম উইকেট - ১০৫ এনামুল হক বিজয় ও মোহাম্মদ নবী (চতুর্থ আসর) ৬ষ্ঠ উইকেট - ৯৮* মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও থিসারা পেরেরা (ষষ্ঠ আসর) ৭ম উইকেট - ৮৭ জিয়াউর রহমান ও সোহাগ গাজী (চতুর্থ আসর) ৮ম উইকেট - ৮৫* মেহেদী হাসান মিরাজ ও ফরহাদ রেজা (চতুর্থ আসর) ৯ম উইকেট - ৪৩ রায়াদ এমরিট ও নিখিল দত্ত (তৃতীয় আসর) ১০ম উইকেট - ৪৮* আবুল হাসান রাজু ও তাইজুল ইসলাম (পঞ্চম আসর) চলতি বিপিএলে সর্বোচ্চ রানের জুটিগুলো ১. মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুশফিকুর রহীম (খুলনা টাইগার্স) - ১৬৮* বনাম কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ২. মেহেদী হাসান ও মুমিনুল হক (ঢাকা প্লাটুন) - ১৫৩ বনাম খুলনা টাইগার্স ৩. আন্দ্রে ফ্লেচার ও জনসন চার্লস (সিলেট থান্ডার) - ১৫০ বনাম খুলনা টাইগার্স ৪. নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজ (খুলনা টাইগার্স) - ১১৫ বনাম সিলেট থান্ডার ৫. শোয়েব মালিক ও রবি বোপারা (রাজশাহী রয়্যালস) - ১০৬ বনাম খুলনা টাইগার্স সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১২ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2QL1XSA
January 12, 2020 at 02:58AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top