লন্ডন, ০৮ ফেব্রুয়ারী - লন্ডন ছেড়ে সিরিয়ায় গিয়ে আইএস-বধূ হওয়া ব্রিটিশ স্কুলছাত্রী শামীমা বেগম তার যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার বিরুদ্ধে করা মামলার প্রথম ধাপে হেরে গিয়েছেন। শামীমা বেগমের বয়স এখন ২০, ইসলামিক স্টেটে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালে ১৫ বছর বয়সে লন্ডন ছেড়েছিলেন তিনি। চার বছর পরে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবির থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ গতমাসে তার যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব বাতিল করেন। এর বিরুদ্ধে আবেদন করে শামীমা বেগমের আইনজীবী তাকে দেশে ফিরতে দেয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন। তবে জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট মামলার বিচারকাজ হয় এমন আংশিক-গোপন আদালতে একটি ট্রাইবুনাল রায় দেয় যে - যেহেতু শামীমা বেগম রাষ্ট্রহীন অবস্থায় নেই, তাই তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া যাবে। সেই বিশেষ ইমিগ্র্যান্ট অ্যাপিলস কমিশন মন্তব্য করেছে যে শামীমা বেগম বাংলাদেশে নাগরিকত্ব চাইতে পারেন। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, কোনো নাগরিক যদি পুরেপুরি রাষ্ট্রহীন হয়ে থাকে - তাহলে তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া অবৈধ। কমিশন বলেছে যে ২০ বছর বয়স্ক শামীমা বেগম বংশানুক্রমিকভাবে বাংলাদেশের নাগরিক এবং তিনি রাষ্ট্রহীন নন। শামীমা তার মায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকত্বের আবেদনও করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে শামীমা বেগম বাংলাদেশের নাগরিক নন এবং তাকে কোনোভাবেই বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, শামীমা বেগম যদি বাংলাদেশে গিয়ে হাজির হয়, তাহলে তার মৃত্যুদণ্ড হবে। জরুরি আবেদন শামীমা বেগমের আইনজীবী ড্যানিয়েল ফারনার বলেছেন, তার মক্কেল অত্যাধিক জরুরি কারণ হওয়ায় অতি সত্বর এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন করবেন। তিনি জানান, শামীমা বেগম যেসব ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন তা আরো বেড়ে গেছে। বর্তমানে উত্তর সিরিয়ার ক্যাম্প রোজ নামের একটি শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন তিনি। তবে কমিশন বলেছে যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ ঐ শরণার্থী শিবিরে শামীমা বেগমকে থাকতে বাধ্য করে তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেননি। ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা বিচারক ডোরন ব্লাম বলেন, শামীমা বেগম এই সিদ্ধান্তের আগেই স্বেচ্ছায় যুক্তরাজ্য ত্যাগ করেন - এবং এই সিদ্ধান্তের কারণে যে তিনি যুক্তরাজ্যের বাইরে ছিলেন, এমনটা নয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। পাশাপাশি তারা এমন মন্তব্যও করে যে আইনি প্রক্রিয়া চলমান থাকার সময় এ বিষয়ে নিয়ে মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। এই মামলায় এখন বিবেচনা করা হবে যে শামীমা বেগমকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে না দেয়ার পেছনে সরকারের নিরাপত্তা ঝুঁকির দাবি যুক্তিসঙ্গত কিনা। গত বছরের অক্টোবরে এক শুনানির সময় শামীমা বেগমের আইনজীবীরা জানায়, শুধুমাত্র নিজের এবং শিশুপুত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মিডিয়ায় দেয়া সাক্ষাৎকারে ইসলামিক স্টেটের প্রতি নিজের সমর্থন প্রকাশ করেন শামীমা বেগম। পরে শরনার্থী শিবিরে তার পুত্র মারা যায়। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রীন ছেড়ে স্কুলের দুই বন্ধুর সাথে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে যান শামীমা বেগম। কয়েকদিনের মধ্যেই তুরস্কের সীমান্ত পার করে রাকার আইএস সদর দপ্তরে পৌঁছান তিনি। সেখানে তিনি ধর্মান্তরিত হয়ে আইএসএ যোগ দেয়া এক ডাচ নাগরিককে বিয়ে করেন। এই দম্পতির তিনটি সন্তান ছিল - যাদের সবাই মারা গেছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা এন এ/ ০৮ ফেব্রুয়ারী
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/31FM6sf
February 08, 2020 at 06:49AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন