লন্ডন, ১৪ মার্চ - ব্রিটেনে করোনা আতঙ্কে ভুগছেন বাংলাদেশিরা। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, এটি একটি প্রজন্মের জন্য সবচেয়ে খারাপ জনস্বাস্থ্য সংকট; এবং অনেক পরিবারকে তারা সতর্ক করেছেন যে তারা তাদের সময়ের আগে প্রিয়জনকে হারিয়ে ফেলবে। তিনি বলেছেন, নভেল করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপের জন্য যে সময় পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা ছিলনা। যুক্তরাজ্যে ভাইরাসে এখন পর্যন্ত মোট ১০ জন মারা গেছে। স্কুলগুলিকে বিদেশে ভ্রমণ বাতিল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ৭০ বছরের বেশি বয়সী এবং স্বাস্থ্যের অবস্থা খারাপ রয়েছে তাদেরকে ভ্রমণে না যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সারাদেশে সর্বশেষ ৫৯৬ জন আক্রান্তের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক ভ্যালেন্স জানিয়েছেন- আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ৫ হাজার থেকে ১০ হাজারের মধ্যে হতে পারে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মনে করছে আসছে সপ্তাহের মধ্যে দেশটির ভাইরাসটি আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশটিতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে এক বাংলাদেশির মৃত্যুতে ব্রিটেনের বাঙালি কমিউনিটিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লকডাউন বা মানুষ কার্যত গৃহবন্দি হওয়ার খবরে বাঙালিরা ও চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মজুদ করা শুরু করেছেন। বাঙালি খাবার দাবারের বৃহৎ আমদানিকারক যারা ইউরোপে ও নিত্যপ্রয়োজনীয় চাল ডাল মসলা সরবরাহ করে থাকেন, তারা জানিয়েছেন মানুষ যেভাবে বেশি পরিমাণ চাল ডাল তৈল কিনছেন তাদের কাছে যা মজুদ আছে বড়জোর এক সপ্তাহ তারা সরবরাহ করতে পারবেন। বাইরের দেশ থেকে সব ধরনের পণ্যদ্রব্য আসা বন্ধ হওয়ার কারণে তারা নতুন করে পণ্য আমদানি করতে পারছেন না। বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটে চারজন রোগী রয়েছে বলে ব্রিটেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর টাওয়ার হ্যামলেটস এর বাংলাদেশিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ শুধুমাত্র টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলেই লক্ষাধিক বাংলাদেশির বসবাস। প্রবাসী অনেক বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এতোদিন টাওয়ার হ্যামলেটের চারপাশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছিলো। কিন্তু সম্প্রতি তা টাওয়ার হ্যামলেটের হাসপাতালে রোগী সনাক্ত হওয়া ও একজনের মৃত্যু আমাদের মধ্যে ভীতি তৈরি হয়েছে। এদিকে, দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, করোনা ভাইরাসে বেশি ঝুঁকিতে আছে দেশটির বয়স্করা ও শিশুরা। আর বয়ষ্ক ও শিশুদের সেই ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে প্রায় ঘরবন্দি হয়ে আছেন। একই সঙ্গে এই সপ্তাহ থেকে দেশটিতে সকল কনসার্ট, জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাছাড়া পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে খুব শীঘ্রই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। করোনায় আতঙ্কিত দেশটিতে এরই মধ্যে বন্ধ করা হয়েছে বেশ কয়েকটি অফিস ও মার্কেট, যার মধ্যে রয়েছে ফেসবুক, এইচএসবি, চায়না মার্কেট, কুইন্স মার্কেট উল্লেখযোগ্য। ভাইরাসটি যত দিন যাচ্ছে তত বেশি মানুষের মধ্যে আতঙ্কের তৈরি করায় তার প্রভাব পরেছে দেশটির খাদ্যবাজারসহ অর্থনীতিতে। দেশটির বড় বড় সুপারশপে খোজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ভাইরাসটি ব্রিটেনে ছড়িয়ে পড়ার কিছুদিন আগে থেকেই মানুষের মধ্যে খাদ্য মজুদ করে রাখার প্রবণতা তৈরি হয়েছিলো। তবে সম্প্রতি টেসকো, সেইনসব্যারি, আজদার মতো বড় সুপারশপগুলো থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, কোন ক্রেতা যেকোন পণ্য পাঁচটির বেশি কিনতে পারবেন না। একই সাথে ক্রেতারা চাইলেই যেসব পণ্য বাজারে কম রয়েছে তা একাধিক কিনতে পারবেন না। ওয়েটনি মার্কেট আইসল্যান্ড নামক সুপার স্টোরে কোন পণ্যই একজনকে দুইটার বেশি দেয়া হচ্ছে না। কাউন্টারে নিয়ে আসলে ও ক্রেতার হাত থেকে দুইটির অধিক পণ্য আটকে দিচ্ছেন বিক্রয় কর্মীরা। ক্রেতার ভিড় সামলাতে নতুন করে বসানো হয়েছে কাউন্টার। এ বিষয়ে হোয়াইচ্যাপেলের একাধিক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী জানান, ২০০৮ সালের পরে অর্থনীতি এমন চাপের মুখে পরছে। এখনই পণ্যের দাম বাড়েনি। তবে পরিস্থিতি এমন হলে সামনে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়বে। এরই মধ্যে স্টাফ সংকট তৈরি হয়েছে। তাছাড়া টুরিস্ট না থাকার কারণে বেচা-বিক্রিও কমেছে কয়েকগুণ। অন্যদিকে, করোনাভাইরাস আতঙ্ক বিরাজ করছে দেশের শেয়ারবাজারসহ দেশটির মূলধারার অর্থনীতিতে। মহাধসের ফাঁদে পড়েছে অর্থনীতি। সোমবার সকাল থেকে তীব্র দরপতনে লেনদেন চলছে পুঁজিবাজারে। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজার স্থিতিশীল নয়। এর মধ্যে করোনাভাইরাস আতঙ্কে দর পতনের গতি বেশি দেখা যাচ্ছে। আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। সরকারের নতুন বাজেটে যদিও ৩০ বিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ রাখা হয়েছে করোনা মোকাবেলায়। সরকারের তরফ থেকে বলা হবে, যে কারো যদি ঠাণ্ডা লাগে তাহলে তাকে এক সপ্তাহের জন্য কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। উল্লেখ্য, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন করোনা ভাইরাস বা কভিড-১৯ নিয়ে কড়া সতর্কতা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, করোনার মহামারি নিয়ন্ত্রণের সক্ষম হবে না ব্রিটেন। এন এ/ ১৪ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2U2ljmA
March 14, 2020 at 07:38AM
এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ...
ফিলাডেলফিয়ার রাজনীতিতে বাংলাদেশি অভিবাসীদের জয়জয়কার
07 Oct 20200টিপেনসিলভানিয়া, ৭ অক্টোবর- যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার সনদ যে নগরীতে গৃহীত হয়েছিল, সেই ফিলাডেলফিয়ার রাজন...আরও পড়ুন »
দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসী হামলার গোলাপগঞ্জের যুবক নিহত
05 Oct 20200টিকেপটাউন, ০৫ অক্টোবর- দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের হামলায় সিলেটের গোলাপগঞ্জের যুবক জাকির হোসেন (৩৫) ন...আরও পড়ুন »
নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের সমাবেশে হট্টগোল
03 Oct 20200টিনিউইয়র্ক, ০৩ অক্টোবর- যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের সমাবেশে আবারও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। বাংল...আরও পড়ুন »
নিউইয়র্কে গাড়ির ধাক্কায় বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু
03 Oct 20200টিনিউইয়র্ক, ০৩ অক্টোবর-যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জেরিকোর লং আইল্যান্ড এক্সপ্রেসওয়েতে হেঁটে যাওয়ার সম...আরও পড়ুন »
জার্মানিতে বাংলাদেশি প্রবাসীর শতাধিক বাড়ি
02 Oct 20200টিবার্লিন, ০২ অক্টোবর- নিজের জমানো টাকায় কিশোর বয়স থেকে ব্যবসা শুরু করে জার্মানিতে এখন শতাধিক বাড়ির ম...আরও পড়ুন »
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.