ঢাকা, ১৫ মার্চ - যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাইএকটিমাত্র গানের মাধ্যমেই তিনি সুবিদিত। এটি ছাড়াও অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন হাসান মতিউর রহমান। শ্রোতাপ্রিয় গানটি লেখার নেপথ্যকথা ভাগাভাগি করেছেন। যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই গানটির কথা কিভাবে লেখা হলো, পেছনের গল্পটা জানতে চাই। এই গানটা ১৯৯০ সালে লেখা। ফ্রান্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি দলীয় সম্মেলন ছিল। সেখানে শিল্পী ছিলেন মলয় কুমার গাঙ্গুলী। তাকে বলা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি এবং শেখ হাসিনাকে নিয়ে আরেকটি গান করতে। তখন গান লিখি ক্যাসেটের জন্য। শ্রোতারাও আমার গান গ্রহণ করেছিলেন। মলয় কুমার গাঙ্গুলী গানগুলো লেখার দায়িত্ব আমাকে দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রথমে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান লেখার জন্য রাজি হইনি। কারণ জাতির পিতাকে নিয়ে গান লেখা মুখের কথা না। তারপরও যখন আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হলো। গানগুলো লেখার জন্য দুইদিন সময় দেওয়া হয়। আমাকে বলার পর সেদিন রাতেই লিখতে বসি। শুরুতে কিছুই মাথায় আসছিল না। আর যে কথাগুলো আসছিল মনে হচ্ছিলো বঙ্গবন্ধুর সাথে কথাগুলো যায় না। শেষ রাতের দিকে মনে হলো কথাগুলো কীভাবে যেন আমার ভেতর চলে আসছে। ফজরের আজানের সময় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। তখন লিখলাম যদি রাত পোহালে শোনা যেতো বঙ্গবন্ধু মরে নাই, যদি রাজপথে আবার মিছিল হতো বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই। এই গানটির রের্কডিং কোথায় হয়েছিলো? তখনকার ঝংকার স্টুডিওতে গানটার রেকডিং হয়। আলামস আলী বেহালা বাজাতেন, উনার কম্পোজিশনে মলয় কুমার গানটি গাইলেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের সময় আরও কিছু গান একত্র করে আমারা একটা ক্যাসেট তৈরি করি। গানগুলো যখন বাজালাম তখন মানুষ সেগুলো লুফে নিলেন। গানগুলো আওয়ামী লীগের জনসভায়, ধানমন্ডি-৩২ নাম্বারের দিকে রিকশায় করে বাজানো হতো। এইভাবে গানগুলি খুব দ্রুত ছড়িয়ে গেল। লক্ষ লক্ষ কপি ক্যাসেট বিক্রি হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গানটি শোনার পর কী বলেছিলেন? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমকে বাসায় ডেকে বললেন তোমার লেখা গান অনেক ভালো লাগে। যদি রাত পোহালে শোনা যেতো এটি তোমার অসাধারন একটি সৃষ্টি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মারা যাবার পর তাকে নিয়ে এটিই সেরা গান বলে আমার কাছে মনে হয়। তার বাসায় সকাল সাতটায় গিয়েছিলাম। সেখানে নাস্তা করেছি। এটা আমার জীবনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এটা কোনদিন ভুলতে পারব না। গানটি নিয়ে আরও কোন স্মৃতি থাকলে পাঠকদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারেন। এই গানটির জন্য আমার বিশাল পরিচিতি তৈরি হয়েছে। যেখানেই যাই সবাই এই গানটির কথা বলে। দল মত নির্বিশেষে যারা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসেন তারা আমাকে এই গানটির জন্য অনেক সম্মান এবং উৎসাহ দেন। গান লিখে একজন গীতিকার এক জীবনে যতটুকু অর্জন করতে পারে আমার মনে হয় এই গানটি আমাকে সেটার কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছে। আপনার লেখা উল্লেখযোগ্য অন্য গানগুলো সম্পর্কে জানতে চাই। মুজিব পরদেশীর পুরো ক্যাসেট বন্দি কারাগারে, কেবল ভালবাসা জানতাম না, আশরাফ উদাসের আমার লাইন হয়ে যায় আঁকা বাঁকা আসো যদি বাঁশ বাগানে আবার হবে দেখা, পুকুরেতে পানি নাই পাতা কেন ভাসে। মমতাজের এবার না আসিলে বাড়িতে। ঝুমু খানের পান খাইতে চুন লাগে ভালোবসতে গুন লাগে। রবি চৌধুরীর বন্ধু হইলা না আমার। দিলরুবা খানের দেখা আরিচা ঘাটে শাহজালাল ফেরিতে। রুনা লায়লার রাঙ্গামাটির পাহাড়ে দুপুর বেলা আহারে, নাম ধরে কে বাঁশরি বাজায়। এন্ড্রু কিশোরের তুমি যে কলেজের নতুন ছাত্রী ভালবাসা নাম তার। রাজিবের তুমি যে ক্ষতি করলে আমারসহ অনেক গান। এন এইচ, ১৫ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2TQunvZ
March 15, 2020 at 02:45AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন