হায়রে নেশা! একটা প্রতিভাকে কিভাবে ঠেলে দিল ধ্বংসের দিকে! ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার ফ্লাভিও দোনিজেতের জীবনটা কেমন হওয়ার কথা ছিল, আর কেমন হলো। এক কোকেন আসক্তি একদম এলোমেলো করে দিয়েছে এই ফুটবলারের জীবন। এমনই নেশায় পড়েছিলেন, কোকেনের টাকা জোগাতে বিক্রি করে দিয়েছিলেন তার ক্লাব বিশ্বকাপের মেডেলটিও। সাবেক সাও পাওলো সেন্টার ব্যাকের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল ওই পদকটিই। ২০০৫ সালটা তার কেটেছিল স্বপ্নের মতো। ওই বছর পালিস্তা স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপ, কোপা লিবারতাদোসের সঙ্গে লিভারপুলকে হারিয়ে সাও পাওলো জেতে ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপাও। ওই টুর্নামেন্টে লিওনার্দো বনফিমের চোটে বদলি হিসেবে ডাক পেয়েছিলেন দোনিজেত। ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের পর সাও পাওলোর অন্য সদস্যদের মতো স্মারক মেডেল পেয়েছিলেন তিনিও। কিন্তু দোনিজেতের কাছে তখন ওই মেডেলটা ছিল কেবলই টাকার মূল্য। গ্লোবোস্পোর্টকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে অন্ধকার সেই দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ড্রাগস কেনার জন্য আমি ওটা বিক্রি করে দিয়েছিলাম। ৭ হাজার রিয়েসে (ব্রাজিলিয়ান মুদ্রা, ৩ হাজার ৫০০ ডলার) সেটা বিক্রি করি। যে টাকা পেয়েছিলাম, তার প্রায় পুরোটাই কোকেন কিনে ফেলি। প্রথম ডেলিভারি নিয়েছিলাম ১ হাজার রিয়েসের কোকেন। দুইদিনেই সেটা শেষ করে ফেলি। যত টাকা পেতাম, ততই ড্রাগ চাইতাম আমি। ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার যোগ করেন, কোকেনে যখন আমি আসক্ত হয়ে পড়লাম, সবকিছুই গেল। শুরুর দিকে আমি টুকটাক নেশা করতাম। এরপর সেটাই আমার জীবনে সব হয়ে গেল, যা ছিল সবই হারিয়ে ফেললাম। যা টাকা জমাতাম, সব দিয়ে ড্রাগস কিনতাম। এটা ছাড়া আমি থাকতেই পারতাম না। সকাল, দুপুর, বিকেল, রাত আমাকে কোকেন নিতে হতো। অথচ এমন দিনেও তাকে ছেড়ে যায়নি পরিবার। দোনিজেত বলেন, খেলা থেকে আমার অ্যাকাউন্টে যত টাকা আসতো, সবই চলে যেত। আমি সবকিছুই হারিয়েছি। শুধু আমার স্ত্রী, কন্যা আর পরিবার ছাড়া। তারা এখনও আমার সঙ্গে আছে। কোকেনের এই নেশার কারণে ২০০৯ সালে ফুটবল ছেড়ে দিয়েছিলেন দোনিজেত। ছয় বছর বিরতি দিয়ে ২০১৫ সালে তাবাও দি সেরার হয়ে ফেরেন। ২০১৯ সালে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো পর্তুগিসাতে যোগ দেন। এখনও আছেন সেই ক্লাবে। মাঝের ওই বিরতি নিয়ে তিনি বলেন, আমি কখনও বাসায় থাকতাম না। শুধু পার্টি আর মদ নিয়ে পড়ে থাকতাম। এমন সময় ছিল যখন একটি দিনও আমার কোকেন ছাড়া কাটেনি। এটা নেয়ার ফলে আমি মুটিয়ে যাচ্ছিলাম। হাঁটুর চোটে পড়ি, দৌড়তে পারতাম না। তখন বলেছিলাম, সব শেষ, আমি চিরতরে ফুটবলকে বিদায় বললাম। ৩৬ বছর বয়সী দোনিজেত এখন বেরিয়ে এসেছেন নেশার জগত থেকে। নিজের শহর আমেরিকানাতে বাগানের কাজ নিয়ে পড়ে আছেন, অতীত ভুলে সুন্দর একটি জীবনের অপেক্ষায়! সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২৫ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2AaVbQ3
May 25, 2020 at 05:54AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top