মুম্বাই, ২১ ফেব্রুয়ারি- প্রায়শই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মহিলাদের যৌন হেনস্থার খবর সামনে আসে। এক সমীক্ষায় দাবিও করা হয়েছিল, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যত সংখ্যক যৌন নিগ্রহের ঘটনা ঘটে, তার মাত্র ১ শতাংশ ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। বাকিটা আড়ালেই থেকে যায়। লজ্জায় অধিকাংশ মহিলাই মুখ খোলেন না। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এই যৌন হেনস্থাকে নিশানা করলেন এক দক্ষিণী অভিনেত্রী। ভারালক্ষ্মী শরথকুমার নামে এই তামিল অভিনেত্রী তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে জানিয়েছেন, কী ভাবে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রোগ্রামিং হেড তাঁকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন। টুইটারে অবশ্যে সেই টেলিভিশন চ্যানেলের নাম নেননি ভারালক্ষ্মী। তিনি টুইটারে করা পোস্টে জানিয়েছেন, টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে তাঁর অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। সেই নিয়ে আলোচনা করতে তিনি চ্যানেলের দফতরে গিয়েছিলেন। সেখানেই ওই প্রোগ্রামিং হেড তাঁকে অফিসের বাইরে দেখা করতে বলেন। ভারালক্ষ্মীর দাবি, তিনি জিজ্ঞেসও করেছিলেন সেখানে, অনুষ্ঠানের বিষয়ে কোনও কথা হবে নাকি? জবাবে টেলিভিশন চ্যানেলের ওই প্রোগ্রামিং হেড নাকি কু-ইঙ্গিত করেন এবং জানান, অন্য বিষয়ে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে চান। এর পরই নাকি ক্ষিপ্ত ভারালক্ষ্মী ওই প্রোগ্রামিং হেডকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। টুইটারে এই যৌন হেনস্থার কথা ফাঁস করার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষিপ্ত ভারালক্ষ্মী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মেয়েদের সঙ্গে যৌন হেনস্থাকে নিশানা করেন। তিনি টুইটারে করা পোস্টে লিখেছেন, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা পুরুষদের অধিকাংশই বলেন, এই জায়গাটা এমনই। সব জেনেই তো এখানে কাজ করতে মহিলারা আসেন। তা হলে এই নিয়ে এত অনুশোচনা কেন? ভারালক্ষ্মী নিজের টুইটে এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করার সঙ্গে সঙ্গে জবাবও দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, যে সব পুরুষ এই ধরনের কথা বলেন, তাঁদের আমি এটাই বলতে চাই যে, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মাংসের টুকরো হতে আসিনি, বা এখানে যে ভাবে মেয়েদেরকে দেখা হয় সে ভাবে বিবেচিত হতে আসিনি। আমি অভিনয় ভালবাসি। এটা আমার ব্যক্তিগত পছন্দ। নিজের কাজকে নিখুঁত করতে খাটুনি থেকেও পিছপা হই না। সুতরাং, যে সব পুরুষরা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মেয়েদের এতটা নিচু চোখে দেখে, তাঁদের আমি বলব হয় সম্মান করুন, না হলে কেটে পড়ুন। টুইটারে ভারালক্ষ্মী আরও বিষ্ময় প্রকাশ করে লিখেছেন যে, তিনি পুরোপুরি ফিল্ম ব্যাকগ্রাউন্ডের পরিবার থেকে এসেছেন। তাঁর বাবা দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যথেষ্টই পরিচিত নাম। অথচ, এমন বাবার মেয়ে হয়েও তাঁকে যৌন হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। যে সব মেয়েরা সাধারণ পরিবার থেকে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কেরিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখেন, তা হলে তাঁদের অবস্থা কেমন? এই প্রশ্নও টুইটে ছুঁড়ে দিয়েছেন ভারালক্ষ্মী। দক্ষিণী এই অভিনেত্রীর মতে, আমার জীবন আমি কেমন ভাবে চালাব, সেটা আমার বিষয়। আমি কী পোশাক পরব, আমার শরীরকে আমি কী ভাবে প্রদর্শিত করব- সেটাও আমার নিজস্ব অধিকার। কিন্তু, মেয়ে বলেই যে আমাকে অসম্মান করা যায়, এই ভাবনা যে সব পুরুষ ভাবেন, তাঁদের বলি, এটা আর চলবে না। তাই সমস্ত মহিলাকেই বলছি, অসম্মানের শিকার হলে প্রতিবাদ করুন। প্রকাশ্যে সরব হন। তবেই পরিস্থিতিতে বদল আসতে পারে। আমরা যদি এখনও প্রতিবাদী না হতে পারি, তা হলে ধর্ষণের মতো শব্দ সমাজ থেকে কোনও দিন বিদায় নেবে না। ভারালক্ষ্মীর এই টুইটারে এখন চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অনেকেই বলছেন, তামিল সিনেমায় অন্যতম জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। বহু অভিনেত্রীর মতে, ভারালক্ষ্মীর পরিবার যথেষ্টই প্রভাবশালী। তাই তিনি এ ভাবে মুখ খুলতে পেরেছেন। কিন্তু, অন্যদের পক্ষে ভারালক্ষ্মীর মতো এতটা সাহসী হওয়া সম্ভব নয়। এফ/১৫:৪৬/২১ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2kGQl4t
February 21, 2017 at 09:47PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top