ঢাকা, ০৪ জুন- মিডিয়ার একসময়ের আলোচিত নাম নাজনীন আক্তার হ্যাপী। চলচ্চিত্র জগতের এই অভিনেত্রী আলোচনায় আসেন ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের সঙ্গে স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে। জাতীয় দলের এই ক্রিকেটারকে স্বামী হিসেবে পেতে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। রুবেলকে এজন্য কারাভোগও করতে হয়। তবে শেষ পর্যন্ত রুবেল-হ্যাপীর সম্পর্ক আর টিকেনি। রুবেলের বিয়ের পর পাল্টে যায় হ্যাপীর জীবনধারা। রঙিন পর্দা কাঁপানো এই অভিনেত্রী এখন সম্পূর্ণ ভিন্নজগতের মানুষ। ইসলামি বিধান মেনে পুরোদস্তুর জীবনযাপন করছেন। বিয়ে করেছেন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে দাড়িওয়ালা এক শিক্ষককে।। ধর্মীয় জ্ঞান লাভের জন্য পড়ছেন মাদ্রাসায়ও। মিডিয়ার আলোচিত হ্যাপী এখন আমাতুল্লাহ (আল্লাহর বাঁদী) হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। সেই হ্যাপীর বদলে যাওয়া জীবন নিয়ে একটি বই রচিত হয়েছে। সাদেকা সুলতানা সাকী নামে এক লেখিকা বইটিতে তুলে ধরেছেন হ্যাপীর বদলে যাওয়া জীবনের নানা দিক। হ্যাপী থেকে আমাতুল্লাহ নামের বইটি প্রকাশ করেছে বাংলাবাজারের প্রথমসারির ধর্মীয় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাকতাবাতুল আযহার। বইটি প্রকাশের প্রথম দিনেই এক হাজারের বেশি কপি বিক্রি হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন প্রকাশক। কী আছে হ্যাপী থেকে আমাতুল্লাহ বইটিতে? এমন প্রশ্নের উত্তর পেতে বইটির সম্পাদকের কথায় বলা হয়েছে, নাজনীন আক্তার হ্যাপী। এই তো কিছু দিন আগেও তিনি ছিলেন সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা। অর্থ, গ্ল্যামার, জনপ্রিয়তা, শোবিজ জগতে অবস্থান- সবই ছিলো তাঁর। কিন্তু সে-সব ছেড়ে এখন তিনি আপদমস্তক পর্দাবৃত দ্বীনদার মুসলিম নারী। সিনেমার কৃত্রিম নিয়ন আলোর জগত ছেড়ে চলে এসেছেন হিদায়াতের আলোকিত ভুবনে। পড়াশোনা করছেন মাদ্রাসায়। যাচ্ছেন দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতে। নিজে যেমন দ্বীনের ওপর উঠে এসেছেন, তেমনই অন্যকেও দ্বীনের পথে ডেকে যাচ্ছেন নিরন্তর। এমনকি এতোদিনের সুপরিচিত নাম হ্যাপী ছেড়ে এখন তিনি নিজের পরিচয় দিচ্ছেন আমাতুল্লাহ। এই বইটি সম্পর্কে সাক্ষাৎকারধর্মী বইটির লেখিকা সাদিকা সুলতানা সাকী বলেন, আমি অনেক দিন ধরে আমাতুল্লাহ (নাজনীন আক্তার হ্যাপী) কে পর্যবেক্ষণ করে আসছি। তাঁর জীবনের দু-দিক লক্ষ্য করছি। দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণে মনে হলো, এটি কোনো কাল্পনিক চরিত্র নয়। আমাদের সমাজেরই একটি শক্তিশালী চরিত্র। একজন হ্যাপীর মাঝে আমি আমার আশপাশেরঅনেক বোনের জীবনের প্রতিচ্ছবি দেখেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, এ সমাজে হ্যাপী হওয়াটা খুব সহজ। কিন্তু আমাতুল্লাহ হওয়াটা অনেক কঠিন। এই কঠিন কাজটাই আমার বোন আমাতুল্লাহ করেছেন। তখন আগ্রহ জন্মালো, কীভাবে তিনি হ্যাপী থেকে আমাতুল্লাহ হলেন, তা যেমন আমার জানা দরকার, তেমনই অন্যদের জানানো প্রয়োজন। সে প্রয়োজনীয়তা সামনে রেখেই আমি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ হই। বইটির প্রকাশক ওবায়দুল্লাহ আজহারি বলেন, অনেক ভালো মানের বই ইতোপূর্বে আমরা প্রকাশ করেছি। তবে এ বইটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই এতটা পাঠকপ্রিয়তা পাবে আমাদের ভাবনার বাইরে ছিল। মধ্যপ্রাচ্য, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া থেকেও অর্ডার এসেছে। প্রথমদিনেই ছাপানো সব বই শেষ হয়ে গেছে। যারা ইসলামিক বই পড়তে অভ্যস্ত নয়, তারাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, বইটির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বইটি প্রকাশ হওয়ায় খুশি হ্যাপী নিজেও। বইটি হাতে পেয়ে হ্যাপী তার ফেসবুকে লিখেছেন, নতুন বইয়ের ঘ্রাণে আমার ঘর সুবাসিত হয়ে আছে আলহামদুলিল্লাহ! ১০০ কপি বই পাঠিয়েছেন মাকতাবাতুল আযহার থেকে। অনেক অনেক জাযাকাল্লাহ মাকতাবাতুল আযহারের প্রকাশক ভাইকে, এবং বইটির সম্পাদক ভাইয়া এবং তার আহলিয়াকে যিনি আমার সাক্ষাৎতকার নিয়েছেন। এবং প্রচণ্ড কষ্ট করে সবকিছু ম্যানেজ করেছেন। আমি কৃতজ্ঞ। আল্লাহ আপনাদের কবুল করুন। অন্তর থেকে আপনাদের জন্য আমার দোয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই। অনেক খুশি লাগছে আলহামদুলিল্লাহ! বইটা কল্পনার চেয়েও বেশি সুন্দর হয়েছে মাশাআল্লাহ! হাতে না নিলে এই বইয়ের সৌন্দর্য বোঝা সম্ভব নয়।অনেক বেশি সুন্দর। আর/১০:১৪/০৪ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2rTudXO
June 05, 2017 at 06:00AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন