ঢাকা, ০৭ জুলাই- ফুটবল অনুসারী হয়ে থাকলে নিশ্চয়ই বুঝে ফেলেছেন কী নিয়ে কথা হচ্ছে। শিরোনামে বাংলাদেশ নিয়ে হতাশার ব্যাপারটি টের পেলেও বুঝে ফেলার কথা ইঙ্গিতটা কোন খেলা নিয়ে। জুলাই মাসের ফিফা র্যাঙ্কিং প্রকাশিত হয়েছে আজ। সে র্যাঙ্কিংয়ে নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয় সেরা অবস্থানে চলে এসেছে ভারত। বিশ্ব ফুটবলে ৯৬তম দল এখন বাংলাদেশের প্রতিবেশীরা। ক্যালেন্ডারের পাতা একটু পিছিয়ে ২০১৫ সালে যাওয়া যাক। ফেব্রুয়ারিতে ভারতীয় ফুটবল দলের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হলো স্টেফান কনস্ট্যানটাইনকে। দুর্দশা আর হতাশা তখন দলকে ঘিরে। ভারত তখন র্যাঙ্কিংয়ের ১৭১তম স্থানে। বাংলাদেশ তখন ১৪ ধাপ এগিয়ে ভারতের চেয়ে। কনস্ট্যানটাইন দল নিয়ে মাঠে নামার আগেই র্যাঙ্কিংয়ে আরও দুই ধাপ পিছিয়ে যায় ভারত। র্যাঙ্কিংয়ের ১৭৩-এ নামা দল নিয়ে দারুণভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন এই ইংলিশ কোচ। ফুটবলের অগ্রযাত্রাকে শুধু সাফকেন্দ্রিক (দক্ষিণ এশিয়া) না রেখে আরও ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যই তাঁর। কনস্ট্যানটাইন এশিয়ার শক্তিশালী দলগুলোর সঙ্গে টক্কর দেওয়ার জন্য এখন তৈরি করছেন ভারতকে। সে পথেই বয়সভিত্তিক দলগুলোর ওপর জোর দিয়েছে ভারত। দক্ষিণ এশিয়ান প্রতিযোগিতাগুলোতে মূল দলকে না খেলিয়ে তরুণদের সুযোগ দিয়েছে ভারত। সাংগঠনিক ক্ষমতা ও সদিচ্ছার প্রয়োগেই এ বছরের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের আয়োজকের নাম ভারত। আর আয়োজক হওয়ার সুবাদে ফুটবলের একটি বিশ্বকাপ খেলার স্বাদ পেয়ে যাচ্ছে ভারতীয়রা। এ সাফল্যের স্বাদ মিলিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ দিতে চায় না ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। এ কারণেই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আয়োজনের চিন্তাভাবনাও শুরু করেছে দেশটি। সংখ্যায় খুবই নগণ্য হলেও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের একাডেমিতেও সুযোগ পাচ্ছে ভারতের কিশোরেরা। এমন সুপরিকল্পিত পথ চলাতেই গত মে মাসে তৃতীয়বারের মতো র্যাঙ্কিংয়ের সেরা এক শতে চলে এসেছে ভারত। এশিয়ার ১২তম দল এখন তারা। আর ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাবি করা বাংলাদেশ গত মার্চেই চলে গিয়েছিল ইতিহাসের সর্বনিম্ন র্যাঙ্কিংয়ে১৯৩। কফিনের শেষ পেরেকটা ভুটানই (এখন তারা র্যাঙ্কিংয়ে ১৬৪তম দল) ঠুকেছিল। এএফসি সলিডারিটি কাপ খেলার সুযোগ পেয়েও তাতে সাড়া দেয়নি বাংলাদেশ। ফিফা আয়োজিত টুর্নামেন্ট থেকে আগামী বেশ কিছুদিন দূরেই থাকতে হবে বাংলাদেশকে। অথচ এশিয়ান কাপ বাছাই থেকে বাদ পড়লেও সলিডারিটি কাপ জিতে নেপাল ঠিকই এশিয়ান বাছাইপর্বে ফিরে গেছে। ফুটবল মানচিত্রে নাম করতে ভারত যখন বয়সভিত্তিক দলগুলোতে বিনিয়োগ বাড়িয়েই যাচ্ছে, ঠিক উল্টো যাত্রা দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে। ২০১৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দারুণ সাফল্যও টনক নড়াতে পারেনি বাংলাদেশের ফুটবল কর্মকর্তাদের। গত দুই বছরেও বয়সভিত্তিক দলে ভালো করা খেলোয়াড়দের নিয়ে আলাদা কোনো পরিকল্পনা করতে পারেনি বাংলাদেশ। বারবার চেষ্টা করেও একটি ফুটবল একাডেমি সৃষ্টি করতে পারেনি বাফুফে। ২০১৭ সালে এসেও একটি দেশে কোনো ফুটবল একাডেমি নেইব্যাপারটা অচিন্তনীয়! বাফুফেকে একা দোষ দিয়েও লাভ নেই। দেশের কোন ক্লাবেই বা খেলোয়াড় তৈরির ব্যবস্থা আছে! মৌসুম শুরুর ফেডারেশন কাপ হয়ে যাওয়ার পর দুই মাসের জন্য পিছিয়ে গেছে দেশের প্রধানতম লিগ। সব জায়গায় অব্যবস্থাপনা, অপেশাদারি। এসব দেখে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে পৃষ্ঠপোষকেরাও। তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে বাফুফে সভাপতি অবশ্য আশা দিয়েছেন ফুটবল নিয়ে ভাবার, ফুটবলে নবজাগরণ আনার। তবে কোচ নিয়োগ ও ছাঁটাইয়ের নাগরদোলায় চড়ার যে অভ্যাস হয়েছে বাফুফের, তাতে আশা জাগে না। এমন হতাশার মাঝেও একটা সুসংবাদ দেওয়া যাক, গত ছয় মাসে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলেও অবশেষে অবস্থানের উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের। দুই ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ১৯০তম দল! আপাতত বাফুফের সাফল্য বলতে এটিই। আর/১২:১৪/০৭ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2uvf0ul
July 07, 2017 at 07:22AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন