কলকাতা, ০৭ অক্টোবর- দিন কয়েক আগেই মুকুল রায় ও কৈলাশ বিজয়বর্গীর একটি কথোপকথন ফাঁস হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে তৃণমূলের এক সাংসদকে ভাঙিয়ে আনার চেষ্টা করছেন বলে কৈলাশকে জানান মুকুল। পাশাপাশি, সিবিআইকে ব্যবহার করে রাজ্যের চার আইপিএস অফিসারকে ভয় দেখানোর প্রস্তাবও কৈলাশকে দিচ্ছিলেন তিনি। এই ঘটনার পর ফোন ট্যাপ করার অভিযোগও তোলেন মুকুল রায়। এবার ফের প্রকাশ্যে এল আরও একটি কথোপকথনের বিস্ফোরক অডিও। এই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে কণ্ঠস্বর শুনেই বিজেপির দুই নেতাকে চিনে ফেলা যাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। এবারের অডিওতে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীকে মুকুল রায় বলছেন, ম্যাথু স্যামুয়েল তাঁকে একটি ভিডিও দিতে চান। ১২৪ ঘণ্টার একটি ভিডিও ম্যাথুর কাছে আছে বলে উল্লেখ করেছেন মুকুল, যা প্রকাশ্যে এলে নাকি তৃণমূল শেষ হয়ে যাবে। আর তার জন্য টাকা দাবি করেছেন ম্যাথু। তবে আপাতত হংকং-এ রয়েছে নারদ-কাণ্ডের নেপথ্যে থাকা সেই সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল। তাই কীভাবে টাকা পাঠানো হবে সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না মুকুল। ওই অডিও টেপ অনুসারে, পুরোটা শুনে টাকা দিতে আগ্রহও প্রকাশ করতে শোনা যাচ্ছে কৈলাশ বিজয়বর্গীকে। কত টাকা দিতে হবে জানতে চাইলে মুকুল বলছেন, ২ কোটি। ৫০ লক্ষ টাকা অ্যাডভানস আর ২০ দিন পর বাকি টাকা। মুকুলকে আরও বলতে শোনা যাচ্ছে যে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে যদি সত্যিই কোনও বড় প্রমাণ থাকে, তাহলে ঘর-বাড়ি বেচেও সেই টাকা দিতে রাজি তিনি। কিন্তু ম্যাথুকে কীভাবে টাকা পাঠাবেন আর তাঁকে কতটা বিশ্বাস করা উচিৎ হবে, সেটাই বুঝতে পারছেন না এই তাবড় রাজনীতিবিদ। সব শেষে অভয় দিচ্ছেন কৈলাশ। তিনি বলছেন, আমার মনে হয়, ও যদি এটা বলে থাকে, তাহলে এটাই করবে। তাঁর মন্তব্য, ইয়ে জুয়া খেলনা চাহিয়ে। অর্থাৎ তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রমাণ পেতে এই জুয়া খেলতে রাজি বলেই জানাচ্ছেন তিনি। মুকুলও বলছেন, জুয়া খেলার জন্য প্রস্তুত আছি। কিন্তু আমি চাই আপনার সঙ্গে একবার কথা হোক ম্যাথুর। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের ঘুষ নেওয়ার ভিডিও প্রকাশ্যে এনে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন এই ম্যাথু স্যামুয়েল। ভোটবাক্সে প্রভাব না পড়লেও, এতে যে তৃণমূলের ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও নষ্ট হয়েছিল সেটা বলাই যায়। আর এবার লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আটকাতে রাজ্য বিজেপি যে সবরকম চেষ্টা করবে, সেটা বলাই বাহুল্য। এই কথোপকথনে কি সেকরকমই কোনও ছকের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে? সেই প্রশ্নই উঠছে রাজনৈতিক মহলে। এর আগের অডিও ক্লিপে, কৈলাসকে মুকুল জানান, তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর তাঁকে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই পরিবারেরই শান্তনু ঠাকুর ও সুব্রত ঠাকুর সম্পর্কেও দুজনের কথোপকথন হয়। কৈলাশ জানতে চান, শান্তনু মমতার ছেলে কি না। তখন মুকুলবাবু বলেন, মমতার প্রয়াত স্বামীর ভাই মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের ছোট ছেলে শান্তনু। সে অস্ট্রেলিয়ায় পড়ত। ওঁর সঙ্গে মমতার যোগাযোগ নেই। সম্পর্ক তিক্ত বলেও উল্লেখ করেন তিনি। কৈলাশ জানান, শান্তনু তাঁর সঙ্গে দেখা করে বিজেপিতে কাজ করতে চেয়েছেন। কৈলাসের কথায়, ও একটা গাড়ি চাইছে। ঘুরে ঘুরে সম্মেলন করতে চাইছে। আমার ছেলেটিকে খুব স্পার্কিং লেগেছে। শুনে মুকুল বলছেন, তাঁকে দলে নিলে ভালই হবে। শান্তনুকে নিয়ে পরের পদক্ষেপ কী হবে, সে বিষয়ে মুকুলবাবুর পরামর্শও চান কৈলাস। আগের অডিও ক্লিপের কথা মেনেও নিয়েছিলেন মুকুল রায়। মুকুলবাবু জানিয়েছিলেন, এটা তাঁর সঙ্গে কৈলাসেরই কথোপকথন। তাঁর অভিযোগ, তাঁর ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে এবং এই নিয়ে তিনি ফের আদালতের দ্বারস্থ হবেন। তথ্যসূত্র: কলকাতা২৪৭ একে/০৯:৩০/০৭ অক্টোবর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2zYgDpb
October 08, 2018 at 03:31AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top