কলকাতা, ১৬ নভেম্বর- চলতি মাসের গোড়াতেই তাঁর আঁকা ১০টি ছবি হাতে নিয়েছে সিবিআই। সপ্তাহ দুয়েক সে বিষয়ে চুপই ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু শুক্রবার মমতা বিষয়টি নিয়ে প্রথম বারের জন্য মুখ খুললেন। এবং মুখ খুলেই তুঙ্গে তুললেন সিবিআই বিরোধী সুর। বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে সিবিআই-কে ব্যবহার করছে এমন অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেও বহু বার তুলেছেন। সিবিআই, ইডি বা আয়কর দফতরের মতো সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে, দাবি তাঁর। শুক্রবার সেই সব অভিযোগই আরও চড়া সুরে তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্ধ্রের মতো পশ্চিমবঙ্গেও সিবিআই-এর কার্যকলাপে বিধিনিষেধ আরোপ করার কথা তিনি ভাবতে শুরু করেছেন বলে ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন। নির্বাচনে লড়ার জন্য তৃণমূল কী ভাবে টাকা জোগাড় করবে, দলের সাধারণ পরিষদের সভায় এ দিন বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের সামনে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, পার্টিটা তো চালাতে হবে... অনলাইন অ্যাপ তৈরি করা হবে। সেখানে ১ টাকা থেকে ৫০ টাকা, যে যেমন পারবেন দেবেন। বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে তৃণমূলনেত্রী বলেন, আমি কাটমানি নিয়ে সরকার চালাই না। ওদের কোটি কোটি টাকা। টাকা নিয়ে ওরা সারা দেশ জুড়ে কুকীর্তি করছে। যা করছে, তার চেয়ে বেশি প্রচার করছে। তৃণমূলনেত্রীর কটাক্ষ বিজেপির লোক নেই, টাকা আছে। এই সব প্রসঙ্গে কথা বলার সময়েই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উষ্মার সঙ্গে তিনি বলেন, গান গেয়ে বা ছবি এঁকে টাকা রোজগার করলেও আমাদের চোর বলা হবে। সিবিআই-কে ব্যবহার করে গোটা দেশকে বিপদে ফেলা হচ্ছে, বিপর্যয় ডেকে আনা হচ্ছে এমন মন্তব্যও এ দিন শোনা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোপ দেগেই থেমে থাকেননি। সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ করার কথা যে তিনি ভাবতে শুরু করেছেন, সে ইঙ্গিত এ দিন দিয়ে দিয়েছেন। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু নিজের রাজ্যে সিবিআইয়ের পায়ে বেড়ি পরানোর বন্দোবস্ত করেছেন। রাজ্য প্রশাসনের কাছ থেকে অগ্রিম অনুমতি না নিয়ে সিবিআই কোনও তল্লাশি, গ্রেফতারি বা জিজ্ঞাসাবাদ চালাতে পারবে না অন্ধ্রে চন্দ্রবাবুর প্রশাসন এমনই নির্দেশ জারি করেছে। নেতাজি ইন্ডোরের সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন সমর্থন করেন চন্দ্রবাবুর ওই পদক্ষেপকে। তিনি বলেন, চন্দ্রবাবু ঠিক করেছেন। এ সংক্রান্ত একটা নিয়ম রয়েছে এবং সে নিয়মকে কী ভাবে কাজে লাগানো যায়, তা তিনিও ভেবে দেখছেন শুক্রবার এমনও বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই তোপকে অবশ্য তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি। শুক্রবার বিকেলে বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সিবিআই প্রসঙ্গে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছোড়েন রাজ্য সরকারের দিকে। তিনি বলেন, সিবিআই-কে আটকানো অত সহজ নয়। আইন-কানুন-সংবিধান মেনে সিবিআই তৈরি হয়েছে। চাইলেই সিবিআই-কে আটকানো যায় না। মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি কটাক্ষ করে রাহুল সিংহ বলেন, সিবিআই-কে আটকানোর কথা বলে পরিষ্কার ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল সিবিআইয়ের ভয়ে কতটা ভীত। একে/০৫:৪০/১৬ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2Puh57K
November 16, 2018 at 11:39PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন