মাধুরি দীক্ষিত কি অসাধারণ নাচেন। হৃত্বিকের নাচের উপর কেউ নেই। শাহিদ কাপুর তো দুর্দান্ত। ঐশ্বরিয়া কি নাচলো দেবদাস সিনেমায়। নানা উপমা তকমা আলোচনা সমলোচনা করি নায়ক- নায়িকার নাচ নিয়ে। কারণও আছে, তাদেরই তো পর্দায় দেখি। কিন্তু সেই নাচের রুপকার কিন্তু অন্যজন। যাদের পেছনের মানুষ বলা হয়। এই পেছনের মানুষরা যে একদম অচেনা তা নয়। নানাভাবে তারাও পর্দায় এসেছেন। বলিউডের অনেক কোরিওগ্রাফার ভালো সিনেমাও নির্মাণ করেন। অনেকে বিভিন্ন নাচের শোর বিচারক থাকেন। এসবের কারণে খুব একটা অচেনা থাকেন না তাঁরা। ফারাহ খান: ফারাহর গল্প থেকেই শুরু করা যাক। বলিউডের নামজাদা পরিচালক। তবে তিনি সুপরিচিত মুখ নাচের খাতিরে। শতাধিক হিন্দী ছবিতে তিনি নৃত্যপরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। সুপরিচিত নৃত্য পরিকল্পনাকারী সারোজ খান জো জিতা ওহি সিকান্দার সিনেমার কাজ ছেড়ে দিলে ফারাহ সেই সিনেমার কাজ করার সুযোগ পেয়ে যান। ছবির পেহেলি নাশা ছবি কোরিওগ্রাফিতে ভারতের অন্যতম সেরা গান। এরপর থেকেই তিনি সিনেমার গানের নৃত্য পরিকল্পনায় কাজ করেন। তিনি কাভি হা কাভি না সিনেমায় কাজের সময় শাহরুখ খানের সঙ্গে পরিচিত হন। এরপর তারা অনেক ভালো বন্ধু হয়ে ওঠেন। তিনি পাঁচবার ফিল্ম ফেয়ার সেরা নৃত্য পরিকল্পনাকারী পুরস্কার জিতেছেন। তার পরিচালনার খাতায় রয়েছে ওম শান্তি ওম, ম্যায় হু না, হ্যাপি নিউ ইয়ার ছবিগুলো। সরোজ খান: প্রবীণ কোরিওগ্রাফার সরোজ খান নাচে কতটা পারদর্শী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মাধুরী দীক্ষিতের তেজাব ছবির গান এক দো তিন হোক বা বেটা ছবির ধক ধক বা শ্রীদেবীর নাগিন ছবির ম্যায় তেরা দুশমন এই গানগুলোর বিখ্যাত হওয়ার পিছনে কিন্তু অবদান আছে এই গানগুলোর কোরিওগ্রাফির। প্রতিটা গানেই কোরিওগ্রাফি করেন সরোজ খান। অবশ্য শুধু এইগুলো নয় উনি প্রায় দুই হাজারেরও বেশি গানের কোরিওগ্রাফি করেছেন। তালিকায় আছে ডর , দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে, হম দিল দে চুকে সনম, লগান, দেবদাস- এর মতো জনপ্রিয় সব ছবি। সরোজ খানকে বলিউডের তারকারা ভালোবেসে মাস্টারজি বলে সম্বোধন করেন। রেমো ডি সুজা: আসল নাম রমেশ গোপী। গুজরাটি। ১৯৯৫ সালে বলিউড ড্রিমস সিনেমার মাধ্যমে শুরু। এরপর শতাধিক সিনেমার কোরিওগ্রাফি করেছেন তিনি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বলা যায়,জিরো, রেস থ্রী, বজরাঙ্গি ভাইজান, বাজিরাও মাস্তানি, ৩৬ চায়না টাউন,সাথিয়া ,ধুম,ইয়ে জাওয়ানি হে দিওয়ানিসহ আরও অনেক। তিনি একজন পরিচালকও। এবিসিডি সিরিজ,রেস থ্রীসহ পাঁচটি সিনেমা নির্মাণ করেছেন। বৈভবি মার্চেন্ট: ১৯৯৯ সালে হাম দিল দে চুকে সনম সিনেমার ঢোল বাজে সিনেমার মাধ্যমে পথচলা শুরু করেন। এরপর একে এক অসংখ্য সিনেমার নাচের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বলা যায়, দিল্লি-৬, কামবখত ইসহাক ব্যান্ড বাজা বারাত,ডন ২, জিন্দগী না মিলগী দোবারা, ল্যাডিস ভাস রিকি বাহল, বডিগার্ড, এক থা টাইগার ধুম ৩,ওকে জানু,টাইগার জিন্দা হাই,ভারত,সাহো। তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে হিট গান সোয়াগ সে স্বাগত। গনেশ হেগদা: শুধুমাত্র কোরিওগ্রাফারই নন তিনি। তিনি একজন গায়ক ও পরিচালকও। পরিচালনা করেছেন অসংখ্য গানের ভিডিও। আমির খানের লগান ছবিটি তার ক্যারিয়ারের অন্যতম বিখ্যাত সিনেমা। ১৯৯৬ সালে খামোশি দ্যা মিউজিক্যাল সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পথচলা শুরু। এরপর একে একে কাজ করেছেন হেরা ফেরি,ফিজা,ওয়ান টু কা ফোর, সাওয়ারিয়া,রা ওয়ান,আজব গজব লাভ সিনেমায়। প্রভু দেবা: তাকে ভারতীয় মাইকেল জ্যাকসন বলা হয়। তিনি নায়ক হিসেবে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তবে পরিচালক হিসেবে তার চেয়ে সুনাম বেশি। পরিচালনার চেয়েও তার দক্ষতা বেশি রয়েছে নাচে। ১৯৮৬ সালে নাচের ক্যারিয়ার শুরু হয় তার। যেখানে এখনো সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলিউডের চেয়ে ভারতের দক্ষিণের সিনেমায় আরও বেশি জনপ্রিয়। গনেশ আচারিয়া: বয়স যখন ১০, তখন তার বাবা কোরিওগ্রাফার গোপী মারা যান। পরিবার অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়ে। সে তার বোনের কাছেই নাচের প্রাথমিকি তালিম নেন। সেই বয়সেই তিনি বলিউডের বিখ্যাত কোরিওগ্রাফার কামালজির সঙ্গে সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তার মৃত্যু পর্যন্ত সহকারী হিসেবে কাজ করেন। ১৯ বছর বয়সে প্রথম বলিউডে সুযোগ পান। ১৯৯২ সালে মুক্তি পায় তার প্রথম সিনেমা আনাম। তার কোরিওগ্রাফে বিখ্যাত গান লজ্জা সিনেমা বড়ে মুশকিল ও খাকি সিনেমার অ্যায়সা জাদু ঢালারে। এছাড়া গেল কয়েকবছরের হিসেব করলেই তার হিসেবের খাতায় আছে জিরো,কেজিএফ চ্যাপ্টার ১, সঞ্জু বাগি ২,পদ্মাবত, জুডয়ার মত ছবিগুলো। একজীবনে তিনি অসংখ্য সিনেমার কোরিওগ্রাফি করেছেন। এছাড়াও এ তালিকায় আছেন তেরেন্স লিউস, আহমেদ খান, বসকো-কসকো, গীতা কাপুর, সিয়ামক ডাবরদের নাম এই বিখ্যাতদের তালিকায় রাখা যায়। আর/০৮:১৪/০২ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2GWv69y
March 02, 2019 at 07:08PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top