নিউইয়র্ক, ১৬ জুলাই- দেশের বহুল ব্যবহৃত রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওর সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ (৩৩) খুন হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটন এলাকার নিজ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কীভাবে তাকে খুন করা হয় তার একটি প্রাথমিক ধারণা দিয়েছে নিউইয়র্ক পুলিশ। তারা বলছে, বৈদ্যুতিক করাতে দিয়ে কেটে টুকরো করা হয়েছিল ফাহিমের দেহ। কীভাবে জানা গেল খুন হয়েছেন ফাহিম বেশ কিছুদিন ধরে ভাইয়ের খোঁজ না পেয়ে ম্যানহাটনে ফাহিমের অ্যাপার্টমেন্টে আসেন তার বোন। স্থানীয় সময় সাড়ে ৩টার দিকে ওই ফ্ল্যাটে ঢুকে তিনি ফাহিমের খণ্ডিত লাশের টুকরো দেখতে পান। তখনই তিনি ৯১১ নম্বরে ফোন করে পুলিশ খবর দেন। আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম খুন কী বলছে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (এনওয়াইপিডি) মঙ্গলবার বিকেলে ম্যানহাটনের ওই ফ্ল্যাটে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের (এনওয়াইপিডি) দুজন গোয়েন্দা সদস্য তদন্ত চালায়। তারা ফাহিমের দেহের টুকরোগুলোর পাশে একটি বৈদ্যুতিক করাত খুঁজে পায়। এনওয়াইপিডি জানায়, অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ফাহিমের মাথা ও শরীরের অন্যান্য অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি বড় প্লাস্টিক ব্যাগও পাওয়া যায়। খুনের আলামত নিশ্চিহ্ন করার জন্য খুনি এই প্লাস্টিক ব্যাগগুলো সঙ্গে করে এনেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে মৃতের পরিচয় নিশ্চিত হতে করতে পারেনি। বোন ছাড়াও কয়েকজন বন্ধু নিশ্চিত করে মৃত ব্যক্তির নাম ফাহিম সালেহ। তিনি তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। এনওয়াইপিডি আরও জানায়, পুলিশ যখন হাজির হয় তখনো ইলেকট্রিক করাতটি বিদ্যুতের সঙ্গে সংযুক্ত অবস্থায় ছিল। পুলিশের ধারণা, খুনি আলামত গোপন করার আগেই ফাহিমের বোন সেখানে চলে আসেন। পরে খুনি অন্য পথ দিয়ে পালিয়ে যায়। ফাহিমের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনো পৌঁছায়নি। তবে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ধরে নিয়েই তদন্তকাজ শুরু করেছে এনওয়াইপিডি। আরও পড়ুন: মাস্ক পরে যেভাবে ফাহিম সালেহকে হত্যা করে ঘাতক সিসিটিভি ফুটেজে কী দেখা গেছে ফাহিমের ওই ভবনের সিসিটিভির গত সোমবারের ফুটেজে দেখা গেছে, বিকেলে ফাহিম এলিভেটর দিয়ে ওই ভবনে ঢুকছেন। তার পেছনেই মাথায় টুপি, মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভসসহ স্যুট পরা এক লোক একটি স্যুটকেস নিয়ে ঢুকছে। ক্যামেরায় পরের দিকের ফুটেজে দেখা যায়, ফাহিম প্রবেশ করার কিছুক্ষণ পরেই ফাহিমের বোন আসেন। এনওয়াইপিডি বলছে, ওই ভবনে জরুরি বাহির পথ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খুনি ওই পথ দিয়েই পালিয়ে গেছেন। বন্ধুদের মতে, কেমন ছিলেন ফাহিম ফাহিম উচ্চাবিলাসী ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সকালবেলা দৌঁড়াতেন। সারাদিনে মিটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। প্রায় সময় ব্যবসায়ের কাজে নাইজেরিয়া ভ্রমণ করতেন। তার নেশা ছিল নানা ধরনের প্রযুক্তি-গ্যাজেট সংগ্রহ করা। ম্যানহাটানের অ্যাপার্টমেন্টে তিনি একাই বসবাস করতেন। তার লায়লা নামে একটা কুকুর আছে। সেটিকে অ্যাপার্টমেন্টে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তরুণ বয়সেই কোডিংয়ের মাধ্যমে অ্যাপস বানানো শুরু করেন ফাহিম। ওয়ালথামের বেন্টলি ইউনিভার্সিটিতে স্নাতক পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করেন তিনি। তখনই প্র্যাঙ্কডায়াল অ্যাপ তৈরি করে ব্যাপক সাফল্য লাভ করেন। বাংলাদেশে পাঠাও ছাড়াও নাইজেরিয়া আর কলম্বিয়ায় তার আরও দুটি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ কোম্পানি রয়েছে। ২০১৮ সালে নাইজেরিয়ায় গোকাদা নামে মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং ব্যবসার শুরু করেন ফাহিম। ফাহিম সালেহের মৃত্যুর খবরে শোক প্রকাশ করেছেন তারই সহকর্মী পাঠাওর সিইও হোসেন ইলিয়াস। তিনি বলেন, ফাহিম বিশ্বাস করতেন প্রযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের জীবন মান বদলানো সম্ভব। আমাদের মধ্যে সম্ভাবনা দেখেছিলেন তিনি। এম এন / ১৬ জুলাই



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/30icl7J
July 16, 2020 at 06:50AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top