খ্যাতিমান মেকাপ ম্যান আব্দুর রহমান। তিন শতাধিক সিনেমার মেকাপের কাজ করেছেন রহমান। তার শিষ্যরা এখন নাটক সিনেমার নামকড়া মেকাপ ম্যান। কিন্তু আব্দুর রহমান কোথায়? রাজ্জাক, ফারুক, সুচন্দা, ববিতা কে না নিয়েছেন তার মেকাপ! কাজী জহিরের সব সিনেমার মেকাপ করেছেন তিনি। তিনি আজ খুব অসহায়। একা থাকেন একটা বাসায়। তার চোখেও ছানি পড়েছিল। সামর্থ্য ছিল না চোখের অপারেশন করার। এগিয়ে এলেন নায়িকা তমা মির্জা। তিনি খুব বেশি পরিচিত মুখ না। অতবড় স্টারও নন। সংবাদমাধ্যমে আব্দুর রহমানের দু:অবস্থার কথা জেনেছিলেন। নিজে বাসায় গিয়ে তার ব্যবস্থা করেছেন। চোখের ছানিসহ চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করেছেন। এই ঘটনা আব্দুর রহমান নিজে জানিয়েছেন। কিছুদিন আগের আরেকটি ঘটনা মুগ্ধ করেছে। অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া ঝাকজমকপূর্ণ বিয়ের অনুষ্ঠান করেছেন। কতশত মানুষের উপস্থিতি ছিল তার বিয়ের অনুষ্ঠানে। কিন্তু তাতে তার মন ভরলো না।তার মেহেদির অনুষ্ঠান হয়েছে ৪০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে সঙ্গে নিয়ে। তিনি বলেন, লোকজন নিয়ে আমিই ওদের স্কুলে গেছি। আমরা ওদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খেয়েছি। ওদের সঙ্গে আনন্দফুর্তি করেছি। বিয়ের পুরো আয়োজনে আমাকে সবচেয়ে তৃপ্তি দিয়েছে এই আয়োজনটাই। বাচ্চারা অনেক এনজয় করেছে। ওখানকার প্রত্যেকটা মেয়ে হাতে মেহেদি দিয়েছে। আমি ওদের সঙ্গে ইচ্ছামতো নেচে-গেয়ে ফুর্তি করে সময়টা কাটিয়েছি। এটাও আমার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল। যা আমি পূরণ করতে পেরেছি। শবনম ফারিয়া কত বড় মাপের অভিনেত্রী সেটা কথা নয়। কিন্তু তাকে প্রায়ই দেখা যায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে। মডেল জান্নাতুল পিয়া খরচ চালায় কয়েকজন বৃদ্ধার। বৃদ্ধাশ্রমে তাদের দিয়ে এসেছেন। সেখানে যে খরচ দরকার হয়। পিয়াই তা নিয়মিত বহন করেন। এছাড়াও পিয়া প্রায় প্রায়ই নিজের হাতে রান্না করে গাড়ি নিয়ে বের হন। পথ শিশুদের খাবারের ব্যবস্থা করেন। পিয়ার এমন কর্ম সত্যিই মুগ্ধ হওয়ার মত। সিনেমার তারকাদের আমরা হয়ত শুধু পর্দাতেই দেখি। অনেকের ধারণা, তারা শুধু সিনেমার কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু বাস্তবে বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। প্রতিটি দেশেই এমন অনেক তারকা আছেন যারা নিজেদের টাকায় সুবিধা বঞ্চিত মানুষের সেবা করেন, দাতব্য প্রতিষ্ঠান চালান। সে তুলনায় বাংলাদেশ অনেকটা পিছিয়ে। বড় তারকাদের তেমন সমাজকর্মে দেখা যায় না। যা একটা সমাজের জন্য অনেকটা জরুরি। তারকারা অসচ্ছল হলে এগিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু যেসব তারকারা স্বচ্ছল, চাইলেই তারা রাস্তার মানুষ না হোক এগিয়ে আসতে পারেন দু:অবস্থায় থাকা সহকর্মীদের জন্য। কিন্তু সেটা করা হয় না। গানের জগতে আখি আলমগীরকে অনেকে চেনেন মানুভবতার মায়ায়। কারো কোন সাহায্যের দরকার হলে আখি আলমগীর নাকি এগিয়ে আসবেনই। তার সামর্থ্য অনুযায়ী তিনি পাশে থাকার চেষ্টা করেন। যেটা বাইরের অনেক মানুষ জানেন না। কিন্তু এমন কথা একদিন জানালেন গায়ক আসিফ। তিনি বললেন, আর এজন্যই আমি ওকে লিডার বলে ডাকি। মানুষের পাশে মানুষের দাড়ানোর এই দৃষ্টান্ত রয়ে যায়। আইয়ুব বাচ্চু মারা যাওয়ার পর এক ব্যাক্তির ফেসবুক স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়েছিল। ২০১৪ সালের ঘটনা। সৌরভ আল জাহিদ নামের এক ব্যক্তি বলেছেন গল্পটা। তার ভাগ্নে গুরুতর অসুস্থ। ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপারেশন করতে হবে। টাকা যোগাড় হয়নি কোনমতে। শত কষ্টে যা যোগাড় হয়েছে, তাতে ঘাটতি দেড়লাখ। তিনি একটি স্ট্যাটাস দিলেন। পরের দিন সকালে আইয়ুব বাচ্চু হসপিটালে ছুটে গেলেন। বাকি টাকাটা সে শোধ করে দিলেন। শিশুটির মাথায় হাত দিয়ে বলে আসলেন বাবু তুমি সুস্থ হয়ে যাবা। আর বলে আসলেন তার জীবদ্দশায় এই খবর যেন কেউ না জানে। তাই তার মৃত্যুর পরই এই খবর জানানো হয়। বাংলাদেশের স্বচ্ছল তারকার অভাব নেই্ গাড়ি বাড়ি ব্যাংক ব্যালেন্সেরও অভাব নেই অনেক তারকার। কিন্তু আমরা কয়জনকে মানুষের পাশে দাড়াতে দেখি? যে কয়জনের গল্প বলা হয়েছে শুধু তারাই নন। আরও অনেক তারকাই এগিয়ে আসেন মানুষের সেবায়। নির্মলেন্দু গুনের চিকিৎসায় টাকা লাগবে। পরীমনি এগিয়ে এলেন। নানা সময়ে পরীমনির এমন গুনের খবর পাওয়া যায়। অনন্ত জলিলও সাধারনের পাশে থেকেছেন সবসময়। শোনা যায়, শোবিজের অনেককে মাসিক ভাতা দেন তিনি। এছাড়া আরও অনেক দৃষ্টান্তই রয়েছে। কিন্তু যারা এমন দৃষ্টান্তর তোয়াক্কা করেন না। নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত থাকেন। একদিন হয়তো আপনিও কোন এক দরকারে কাউকে পাশে পাবেন না। আর/০৮:১৪/০৪ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2EJKCDC
March 04, 2019 at 07:24PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top